করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ১২ দিনের মধ্যে আবার সিটি স্ক্যান করানোর জন্য বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে গুলশানের ফিরোজা বাসভবন থেকে বের হয়ে ১০টায় হাসপাতালে পৌঁছান তিনি। সঙ্গে রয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় কয়েকজন চিকিৎসক ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন হাজির হন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার নিউজবাংলাকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের সিটি স্ক্যানসহ কয়েকটি পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে এ ব্যাপারে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পর পুনরায় তাকে গুলশানের বাসায় নেয়া হবে।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। গুলশানের বাসভবন ফিরোজার দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে চিকিৎসা চলছে বিএনপি নেত্রীর। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও কয়েকজন।
গত ১৫ এপ্রিল একই হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করানো হয় বিএনপি নেত্রীর। সে রিপোর্ট ভালো আসে বলে বিএনপি থেকে জানানো হয়।
গত শনিবার রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে খালেদা জিয়ার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এই রিপোর্টও পজিটিভ আসে।
করোনায় আক্রান্ত হলেও বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে খালেদা জিয়ার জ্বর, গলাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট কোনো উপসর্গ নেই। তার চিকিৎসার তদারকিতে রয়েছেন লন্ডনে অবস্থান করা তার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়।
২০০৮ সালের ৮ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদার। পরে উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে করে ১০ বছর। ওই বছরই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর বিএনপি নেত্রীকে দেশের বাইরে না যাওয়া ও বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করিয়ে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর দুই দফা বাড়ানো হয় দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর জটিলতা ছাড়াও নানা ধরনের রোগ আছে বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে তার চোখেও অপারেশন করা হয়।