বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের অতি পছন্দের ফল আম। ফলটির স্বাদে অমৃত খুঁজে পাওয়ায় অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, ‘সারা বছর যদি আম পাওয়া যেত!’
তাদের সে আক্ষেপ ঘুচে যেত আম বারোমাসি ফল হলে। কিন্তু যেহেতু এটি মৌসুমি ফল, সেহেতু নির্দিষ্ট সময় পর অনেকের জিভে জল এলেও আম খাওয়া সম্ভব হয় না।
আমপ্রেমী এমন মানুষদের জন্য আছে বিকল্প ব্যবস্থা। সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে সারা বছরেই তারা নিতে পারবেন আমের স্বাদ।
তবে যেনতেনভাবে সংরক্ষণ করলে হবে না; মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম।
তিনভাবে আম সংরক্ষণ করা যায়।
১. আস্ত আম সংরক্ষণ
পাকা আম সংগ্রহ করুন। সেখান থেকে থেঁতলে যাওয়া, পচা ও পোকা ধরা ফলগুলো সরিয়ে ফেলুন। বাকি আম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। মনে রাখতে হবে আমের ওপর যেন কষ লেগে না থাকে। এবার নরম কাপড় দিয়ে আমগুলো মুছে ফেলুন।
আস্ত আম সংরক্ষণ করতে চাইলে তিন ধরনের ব্যাগ লাগবে। কাগজের, কাপড়ের ও পলিথিন ব্যাগ সংগ্রহ করুন।
শুকনো আমগুলো প্রথমে কাগজের ব্যাগে ঢুকিয়ে নিন। কাগজের ব্যাগ পাওয়া না গেলে পত্রিকা দিয়ে মুড়িয়েও রাখতে পারেন। সেগুলোকে কাপড়ের ব্যাগে এবং সবশেষে কাপড়ের ব্যাগটাকে পলিথিন ব্যাগে ঢুকিয়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন।
২. আম কেটে সংরক্ষণ
পাকা আম বেছে নিন। পানিতে ধুয়ে আমের ওপর লেগে থাকা ময়লা ও কষ পরিষ্কার করুন। ছুরি দিয়ে আমের খোসাগুলো ছাড়িয়ে নিন। এবার আমটাকে ছোট ছোট টুকরা করে কাটুন। আঁটি সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই বলে সেটা সরিয়ে রাখুন।
আম কেটে সংরক্ষণ করার জন্য জিপলক ব্যাগ ও প্লাস্টিকের মুখ বন্ধ বাটি লাগবে।
আমের টুকরাগুলো জিপলক ব্যাগে ঢুকিয়ে মুখ বন্ধ করে দিন। জিপলক ব্যাগটা এবার প্লাস্টিকের মুখ বন্ধ বাটিতে রেখে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। একই ব্যাগে অনেক টুকরা না রেখে অল্প অল্প করে রাখুন।
৩. ব্লেন্ড করে সংরক্ষণ
পাকা আম সংগ্রহ করে পানিতে ধুয়ে ফেলুন। আমের খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরা করে আম কেটে নিন। টুকরাগুলো ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে ফেলুন।
চায়ের কাপ, আইসক্রিমের কাপ কিংবা আইস কিউব বানানোর ছাঁচে জুস ঢেলে নিন। সেটাকে ডিপ ফ্রিজে রাখুন। জুস জমে শক্ত হয়ে গেলে বের করে নিন।
এবার জিপলক ব্যাগের প্রয়োজন হবে। জমে যাওয়া আমের জুস জিপলক ব্যাগে ঢুকিয়ে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে ৮ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত আম ভালো থাকবে। খেয়াল রাখবেন, কখনো দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকলে সংরক্ষিত আম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে রকম হলে আম খাওয়ার আগে ভালো করে পরীক্ষা করে নিতে হবে।