পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বহুল প্রচলিত খাবার মুন্ডি। এটি মারমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার। তবে শুধু এই এলাকার মানুষই নয়, যারা পাহাড়ে ঘুরতে যান বা পাহাড়ি খাবার খেতে পছন্দ করেন তারা সবাই বিশেষ ধরনের এই নুডলসের সঙ্গে পরিচিত।
পাহাড়ে গেলে অনেকেই মুন্ডি খেয়ে থাকেন। কেউ কেউ আসার সময় কিনে আনেন মুন্ডির প্যাকেট। তবে প্যাকেটজাত মুন্ডির চেয়ে পাহাড়িদের নিজ হাতে পরিবেশন করা গরম গরম মুন্ডিই বেশি জনপ্রিয়।
কীভাবে বানানো হয় মুন্ডি
মুন্ডি বানানোর পুরো প্রক্রিয়া হাতে হয়। প্রথমে আতপ চাল দুই থেকে তিন দিন ভিজিয়ে রাখা হয়। ভেজা চাল ছোট ছিদ্রযুক্ত চালুনির ওপর রেখে পানি ঝরিয়ে নেয়া হয়। এরপর ঢেঁকিতে দিয়ে মণ্ড তৈরি করা হয়। সেই মণ্ড বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে চাপ দিয়ে নুডলসের মতো চিকন মুন্ডি তৈরি করা হয়।
বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে চাপ দিয়ে মণ্ড থেকে তৈরি মুন্ডি। ছবি: নিউজবাংলা
মুন্ডি পরিবেশন
মুন্ডি প্রথমে সেদ্ধ করে নেয়া হয়। বাটিতে সেদ্ধ মুন্ডি ঢেলে এর ওপর দেয়া হয় লবণ, মরিচ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া। এর ওপর দেয়া হয় গরম চিকেন স্টক ও তেঁতুলের টক। তারপর ধনেপাতা দিয়ে পরিবেশন করা হয় গরম গরম মুন্ডি।
প্রতি বাটি মুন্ডি সাধারণত বিক্রি হয় ২০ টাকায়।
বান্দরবানের কালাঘাটা, বালাঘাটা, মধ্যমপাড়া, উজানিপাড়ায় গেলেই পাওয়া যাবে মুন্ডি হাউস। সন্ধ্যার পর এই দোকানগুলোয় ভিড় করেন স্থানীয় ও পর্যটকরা।
পরিবার নিয়ে মুন্ডি খেতে আসা ঞোছাই হ্লা মারমা নিউজবাংলাকে জানান, এটা খুব জনপ্রিয় খাবার। এতে কোনো রাসায়নিক উপাদান নেই। আবার দামেও সস্তা।
তিনি আরও জানান, তিনভাবে মুন্ডি পরিবেশন করা হয়। ঝোল, চাটনি ও ভাজি। তবে ঝোলটাই মানুষ বেশি পছন্দ করে।
সেদ্ধ ডিম, আলু ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে পরিবেশন করা মুন্ডি ভাজি। ছবি: নিউজবাংলা
রেখা তঞ্চঙ্গ্যা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, টকটক, ঝাল ঝাল মুন্ডি খেতে খুবই সুস্বাদু। বন্ধুবান্ধব ও পরিবার নিয়ে প্রায়ই খাওয়া হয়।
একটি মুন্ডি হাউসের মালিক ইম্পল বড়ুয়া নিউজবাংলাকে জানান, শীতকালে মুন্ডির চাহিদা অনেক বেশি থাকে। গরম গরম পরিবেশন করা এই খাবার তখন মানুষ অনেক খায়। দিন দিন পর্যটকদের কাছে মুন্ডির চাহিদা বাড়ছে। পর্যটকরা যাতে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন তাই প্যাকেট করেও কিছু রাখা হয়।