বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাহাঙ্গীরের ক্যাকটাস প্রেম

  •    
  • ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২৩:৩৩

আশির দশকে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস দিয়ে শুরু করলেও বদলির চাকরির কারণে তাকে বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছিল। তখন অযত্ন আর অবহেলায় অধিকাংশ গাছই নষ্ট হয়ে যায়। ২০১৭ সালে অবসরে যাওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম আবারও শুরু করেন ক্যাকটাস সংগ্রহ। বর্তমানে তার সংগ্রহে আছে প্রায় ২৫০ প্রজাতির কয়েক হাজার ক্যাকটাস।

মানুষ প্রকৃতি, গাছপালা, ফুল-ফলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভালোবাসে। এমনকি প্রকৃতির প্রতি মানুষের দুর্বলতা একটু বেশিই। এইসব মানুষ তাদের নিজেদের শখ আর আত্মতৃপ্তির জন্য বিভিন্ন জাতের গাছ লালন-পালন করেন। তেমনই এক জন বৃক্ষপ্রেমী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি গতানুগতিক কিছু করার উৎসাহ পান না। কাঁটার সৌন্দর্য, কাঁটার গাছ থেকে যে ফুল ফোটে এবং অন্য সব ফুলের চেয়ে অনেক বেশি মনোহর সেটা সবাইকে জানানো, দেখানোর জন্যই পুরো বাড়িতে বানিয়ে রেখেছেন ক্যাকটাসের বাগান।

জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার এলঙ্গি পাড়ায়। গড়াই নদীর কোল ঘেঁষে একটি পুরোনো লাল রঙের বাড়ি তার। মূল ফটক দিয়ে ঢুকেই মনে হবে বাড়িটি লতা-পাতা গাছ গাছালি দিয়ে তৈরি। বাড়ির যেদিকেই তাকানো যায় শুধু ফুল আর লতা-পাতা, ইটের গাঁথুনি দেখা কষ্টকর। বাড়ির বারান্দা থেকে শুরু করে যেদিকেই তাকানো যায় শুধু ক্যাকটাস আর ফুলের গাছ। বাড়ির ছাদে দুটি শেড সেখানে শুধু ক্যাকটাস। এসব ক্যাকটাসে আবার ফুলও ফুটেছে।

আশির দশকে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস দিয়ে শুরু করলেও বদলির চাকরির কারণে তাকে বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছিল। তখন অযত্ন আর অবহেলায় অধিকাংশ গাছই নষ্ট হয়ে যায়। ২০১৭ সালে অবসরে যাওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম আবারও শুরু করেন ক্যাকটাস সংগ্রহ। বর্তমানে তার সংগ্রহে আছে প্রায় ২৫০ প্রজাতির ক্যাকটাস কয়েক হাজার ক্যাকটাস।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘যে সময় আমি শুরু করি তখন আমাদের দেশের ক্যাকটাস ছিল নিম্নমানের। অনলাইন থেকে কেনা শুরু করি। বিদেশে গিয়েছিলাম কয়েক বার। সেখান থেকেও এনেছিলাম। বিদেশে যে সব বন্ধু-বান্ধব আছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কখনও চারা, কখনও বীজ এনেছিলাম। এখন তো বাংলাদেশে ক্যাকটাস সহজলভ্য।’

ক্যাকটাসের বংশবৃদ্ধির জন্য গ্রাফটিং, শেড নির্মাণ, কাঁটা পর্যবেক্ষণ, মিডিয়া তৈরি থেকে শুরু করে সবকিছুই করেন নিজের হাতে। যখন চাকরি করতেন তখন অফিসে যাওয়ার আগে কিছুটা সময়, অফিস শেষে বাড়ি এসে আবার কিছু সময় এবং ছুটির দিনে কঠোর পরিশ্রম করে ক্যাকটাস দেখাশোনা করতেন।

তিনি নিউজবাংলাকে জানান, গাছ যেমন মাটি, সার দিলেই হয়, ক্যাকটাসে কিন্তু তেমনটা হয় না। মাটি লাগে না বললেই চলে। চারা রোপণের জন্য প্রধান কাজ মিডিয়া তৈরি। মোটা বালি, পাতাপচা সার, হাড়ের গুড়া, কয়লার গুড়া, ইটের গুড়া ও জৈব সার দিয়ে মিডিয়া তৈরি করতে হয়। পানি কম-বেশি হলেই গাছ পচে যায়।

জাহাঙ্গীরের বাসার একটি ক্যাকটাস

ক্যাকটাস চাষে যারা আগ্রহী তাদের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ক্যাকটাস পালন করতে হলে অবশ্যই এর চরিত্র, বৈশিষ্ট্য, কী খায়, কী পছন্দ করে (আলো, বাতাস, রোদ) সেসব বিষয় ভালোভাবে জানতে হবে। একটু পানি কম-বেশি হলেই গাছ পচে যায়। সেই জন্য মিডিয়া তৈরি ভালো করে জানতে হবে। ক্যাকটাস প্রচুর বাচ্চা দেয়। বাসায় বসে ভেজিটেটিভ প্রোপাগেশন ও গ্রাফটিং এর মাধ্যমে ক্যাকটাসের বংশ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে অনেক দামে তা বাজারে বিক্রি করা সম্ভব। আমাদের দেশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাচ্ছে, দেশ আরও উন্নত হচ্ছে। এখন অনলাইনের যুগ, সেখানেও বিক্রি করা যায়। যে কোনো কাজে লেগে থাকলে তার সফলতা আসবেই।

এ বিভাগের আরো খবর