যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে চায়নিজ রেস্তোরাঁর পথিকৃৎ চেচিলিয়া চিয়াং আর নেই। বুধবার নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় তার। তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
তার নাতনি সিয়েনা চিয়াং সিএনএনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে কী কারণে চিয়াংয়ের মৃত্যু হয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
চিয়াং ছিলেন চীনা বংশোদ্ভূত। তিনি সানফ্রান্সিসকোতে ‘ম্যান্ডারিন’ নামের একটা রেস্তোরাঁর মালিক ছিলেন। নিজের হাতে সেখানে রান্না করতেন ঐতিহ্যবাহী চায়নিজ খাবার। আবার তা নিজেই পরিবেশন করতেন।
তিনিই প্রথম সানফ্রান্সিকোতে রেস্তোরাঁ সংস্কৃতি বদলে দেন। সেখানে প্রকৃত চায়নিজ খাবারকে করে তোলেন জনপ্রিয়। নিজেও হয়ে ওঠেন সুপরিচিত। তার পথ অনুসরণ করেই পরে সানফ্রান্সিসকোতে অনেক চায়নিজ রেস্তোরাঁ গড়ে ওঠে।
নাতনি সিয়েনা বলেন, ‘নানি ছিলেন অত্যন্ত প্রাণবন্ত, অকুতভয় একজন মানুষ। তিনি রসিকতা পছন্দ করতেন। তার জানাশোনার পরিধি ছিল বিস্তর। এরপরও অজানাকে জানার কী যে আগ্রহ ছিল তার! আর স্বপ্ন পূরণে ছিলেন অবিচল। তার এসব গুণাবলী আমি মিস করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘নানি গল্প বলতেন। সেগুলো একই সঙ্গে বিনোদনমূলক ও দারুণ শিক্ষামূলক। তার গল্প থেকে সরাসরি শিক্ষালাভের সুযোগ হারালাম আমি।’
চেচিলিয়া চিয়াংয়ের জন্ম চীনের সাংহাই শহরে এক উচ্চবিত্ত পরিবারে। তার স্বামী জাপানে কূটনীতিক ছিলেন।
চিয়াং সানফ্রান্সিসকোতে যান ১৯৫৯ সালে। এরপর পোক স্ট্রিটে শুরু করেন রেস্তোরাঁর ব্যবসা।
এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে ২০১৮ সালে সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী চীনা নাগরিকদের অনেকের সন্তানেরা কখনো চীনে যায়নি। চায়নিজ খাবারের সঙ্গেও তাদের পরিচয় নেই। তাদের ভিন্ন স্বাদের খাদ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়াই ছিল তার প্রথম লক্ষ্য।
এ বিষয়ে নতুন প্রজন্মকে জ্ঞান দানের প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেন তিনি। তবে যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে রেস্তোরাঁটিতে তিনি মদ্যপানের ব্যবস্থাও করেন।
মারা যাওয়ার কুড়ি বছর আগে শেফের দায়িত্ব থেকে অবসর নেন চিয়াং। তখন পর্যন্ত তারটির সঙ্গে তুলনা করা চলে এমন চায়নিজ রেস্তোরাঁ সানফ্রান্সিসকোতে দ্বিতীয়টি ছিল না।
সূত্র: সিএনএন