কানাডার টরেন্টোয় শহিদ মিনার নির্মাণ কমিটি থেকে দুই জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা হলেন ব্যবসায়ী গাজী বেলায়েত হোসেন মিঠু এবং তার স্ত্রী নাহিদ আক্তার।
রাষ্ট্রায়ত্ত মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে কানাডায় ‘আত্মগোপন’ করে থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
অন্টারিও শহিদ মিনার নির্মাণ কমিটি (আইএমএলডি) থেকে দুজন চিহ্নিত অর্থ পাচারকারীকে বহিষ্কারের দাবিতে ৭ ফেব্রুয়ারি এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত আসে।
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মাহবুব চৌধুরী রনির সঞ্চালনায় সভায় যোগ দেন টরন্টোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শহিদ মিনার কমিটির সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বহিষ্কারের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় অভিযুক্তদের সামাজিকভাবে বর্জনেরও দাবি ওঠে।
ওসমানী স্মৃতি পরিষদের সেক্রেটারি জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আর কয়েকদিন পর কাঙ্খিত শহিদ মিনারে আমরা পুষ্প অর্পণ করতে যাব। আমার চাই না, নবনির্মিত এই শহিদ মিনার যেন কোনোভাবে কলঙ্কিত হয়।’
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘শহিদের চেতনা হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা। একুশ হচ্ছে দেশপ্রেম ও প্রতিবাদের আরেক নাম। শহিদ মিনার নির্মাণ প্রক্রিয়ায় আমরা এমন কোনো বিতর্কিত ও অভিযুক্ত দেখতে চাই না, যাদের কারণে শহিদের আত্মদান স্মরণে নির্মিত মিনার কোনোভাবে কলঙ্কিত ও অপবিত্র হয়।’
আলোচকেরা আরও বলেন, যারা দেশের স্বার্থের ক্ষতি করে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে জনগণকে পথে বসাচ্ছে, ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করছে, সে সব লুটেরার স্থান কানাডার বাঙালি কমিউনিটিতে হবে না। তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
সভায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে একটি সর্বজনীন গ্রহণযোগ্য উদযাপন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
ভার্চুয়াল বৈঠকে আলোচনা করেন ব্যারিস্টার আলমগীর হোসাইন, আহমেদ হোসেন, ড. মঞ্জুরে খোদা, ফাইজুল করিম, সুমন সাঈদ, মাসুক মিয়া, আজফর সাঈদ ফেরদৌস, ইমরুল ইসলাম, জাকির খান, মাসুদ আলী লিটন, সাদ চৌধুরী, সাকের মোস্তফা চৌধুরী, মৈয়ত্রী দেবী, আ ন ম ইউসুফ, আসাদ নিশু, আইরিন, রাজিবুর, নওশের আলী, মোহাম্মাদ বাশার, রুহুল চৌধুরী, রোকেয়া পারভিন, জাকারিয়া চৌধুরী, ইসমত আরা, মুনির রশিদ, সোলায়মান তালুকদার, ইলিয়াস খান, লিটলী রায়, মামুনুর রশীদ, সুমন সিদ্দিক, ফাইজুল চৌধুরী, ইনতিকাব চৌধুরী তুহিন, ড. সুরভি সাঈদসহ বাঙালি কমিউনিটির নেতাকর্মীরা।
টরন্টোর বাংলা পাড়ার কাছে ডেন্টোনিয়া পার্কে গত বছরের ৭ নভেম্বর নগরীর মেয়র জন টোরিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে স্থায়ী শহিদ মিনারের নির্মাণ শুরু হয়।
ডেন্টোনিয়া পার্কে নির্মাণাধীন শহিদ মিনার। ছবি:নিউজবাংলা
২১ ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগেই মিনারের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদী অর্গানাইজেশন ফর টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ডে মনুমেন্ট ইঙ্কের সদস্যরা।