সৌদি আরবে কোনো কোম্পানিতে প্রবাসী শ্রমিকদের চাকরির ক্ষেত্রে কফিলের (স্পন্সর বা নিয়োগকর্তা) যে একচ্ছত্র ক্ষমতা আছে তা আর থাকছে না। আগামী ১৪ মার্চ থেকে বেসরকারি খাতের কোনো চাকরি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চাকরি করতে আর কফিলের অনুমতি নিতে হবে না।
বুধবার (৪ নভেম্বর) মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য নতুন এই আইনের কথা জানিয়েছে।
এর মাধ্যমে ১৪ মার্চ থেকে দেশটিতে গত ৭০ বছর ধরে চলে আসা কফিলের একচ্ছত্র ক্ষমতার অবসান হবে। পুরনো এই আইনের কারণে কোনো প্রবাসী শ্রমিকই তার কফিলের ইচ্ছার বাইরে কিছু করতে পারেন না। করলে তাকে নানা ধরনের হয়রানি ও নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়। এমনও হয় কফিলের আপত্তির কারণে আজীবনের জন্য সৌদিতে নিষিদ্ধ হন প্রবাসী শ্রমিক।
তবে ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ও গৃহকর্মীরা আপাতত নতুন এই আইনের সুবিধা পাবেন না।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা এসপিএ কফিল প্রথা থাকছে না মর্মে গত সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এরপর এক সপ্তাহ প্রবাসী শ্রমিকরা অপেক্ষায় ছিলেন আসলেই প্রথাটি বিলুপ্ত হচ্ছে কিনা। নতুন আইনে কী থাকছে তা নিয়েও চিন্তায় ছিলেন তারা।
এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়েছে।
করোনার সময় কষ্টে দিনাতিপাত করছেন সৌদি প্রবাসীরা।
এতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ১৪ মার্চ থেকে ছোট কোম্পানির (মোয়াচ্ছাছার) শ্রমিকদের সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেয়া হবে। এই আইন শুধু বেসরকারি কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, গৃহস্থালি কাজকর্মে জড়িত শ্রমিকদের (গৃহকর্মী, ড্রাইভার) জন্য আলাদাভাবে চিন্তা চলছে। পরবর্তীতে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে।
নতুন এই ঘোষণায় বিদেশি শ্রমিকরা বেশকিছু সুবিধা পাবেন।
এর মধ্যে আছে-
১. চলমান চুক্তি শেষে চাকরি পরিবর্তনের জন্য কফিলের অনুমতি নিতে হবে না। চুক্তিবদ্ধ অবস্থায় নোটিশ দিয়ে নির্দিষ্ট সময় শেষে অন্যত্র চাকরি নিয়ে যাওয়া যাবে।
২. ফাইনাল এক্সিট ও রি-এন্ট্রি ভিসার জন্য কফিলের কোনো অনুমতি লাগবে না।
৩. চাকরির চুক্তির মেয়াদ শেষে কর্মী সহজেই ‘ফাইনাল ভিসা’ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে কফিলের কোনো প্রকার অনুমতি লাগবে না।
৪. কফিল হুরুব (কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত দেখিয়ে পুলিশে রিপোর্ট) করতে পারবেন না।
বর্তমান আইনে কফিল পুলিশের কাছে তার কোনো কর্মীর বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিতির রিপোর্ট করলে তাকে আটক করে দেশে পাঠিয়ে দিতে পারে এবং পরবর্তীতে তিনি কোনোদিন আর সৌদি আরবে প্রবেশ করতে পারেন না।