করোনা মহামারীর কারণে প্রায় সাত মাস বন্ধ থাকার পর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য খুলেছে কাবা শরিফ। ৪ অক্টোবর শুরু হয়েছে ওমরাহ পালন। আপাতত দিনে ছয় হাজার মুসলমান পবিত্র কাবা ঘর তাওয়াফের সুযোগ পাচ্ছেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে চারটি পর্যায়ে ধীরে ধীরে সবার জন্য ওমরাহ পালনের সুযোগ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব সরকার। এক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে ১ নভেম্বর পর্যন্ত সৌদি নাগরিক এবং সেদেশে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকেরা মোবাইল ফোন অ্যাপ ‘ইতমারানা’র মাধ্যমে আবেদন করতে পারছেন। ১ নভেম্বর থেকে পর্যায়ক্রমে বিদেশিদের ওমরাহ পালনের সুযোগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
মসজিদে হারামে প্রবেশের ১৫ মিনিট আগে নির্ধারিত চেক পয়েন্টে উপস্থিত হয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে নিবন্ধিত নারী-পুরুষ ওমরাহ পালন করছেন।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের টুইটার পেজ দেখুন এখানে।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট দেখুন এখানে।
দীর্ঘদিন পর ওমরাহ পালনের সুযোগ পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সৌদি নাগরিক এবং প্রবাসীরা।
জেদ্দা-নিবাসী ফেনীর সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুন্দর পরিবেশে তিন ঘণ্টায় পবিত্র ওমরাহ সম্পন্ন করতে পেরে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাচ্ছি।’
মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ওমরাহ করতে এসেছেন রিয়াদের মিশান আল-হারবি। জানালেন, কিছুটা শংকায় ছিলেন, ছোটো মেয়েটিকে নিয়ে ওমরাহ করার অনুমতি মিলবে কিনা। তবে নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে তেমন জটিলতায় পরেননি। ওমরাহ পালন করতে পেরে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানালেন তিনি।
ওমরাহ করতে আসা আরেক সৌদি নাগরিক সুরাইয়া বলেন, মসজিদুল হারাম তথা কাবা শরিফের আঙিনায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হবে, এমন কিছু জীবনেও কল্পনা করেননি; দীর্ঘ সাত মাস পবিত্র এ আঙিনা থেকে দূরে থাকতে হয়েছে। এখন মহান আল্লাহর রহমতে আবারও বাইতুল্লাহর দরজা খুলেছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, ওমরাহ চলাকালীন কাবা শরিফের পুরো আঙিনায় দিনে ১০ বার জীবাণুমুক্তকরণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ওমরাহ পালনের আগে প্রত্যেককে জীবাণুমুক্ত করা এবং বোতলে জমজমের পানি দেয়া হচ্ছে।
তবে এখনও ‘হাজারে আসওয়াদ’ বা পবিত্র ‘কালো পাথর’ স্পর্শ বা চুম্বনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং কাবা শরিফের চারপাশে বসানো অস্থায়ী প্রাচীরের বাইরে থেকেই তাওয়াফ করতে হচ্ছে।
এছাড়া ওমরাহ পালনকারীদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা চালু আছে এবং কারো মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিলে তাদের জন্য রাখা হয়েছে আইসোলেশন ব্যবস্থা। এসব সেবা নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ স্বেচ্ছাসেবক দলকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।