সাহিত্যিক ও সাংবাদিক হিসেবে সমাদৃত হলেও দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রবাদ পুরুষ জহির রায়হান। কিংবদন্তি এ চলচ্চিত্র নির্মাতা তার প্রতিটি চলচ্চিত্রে বলেছেন শোষিত মানুষের মুক্তির কথা।
সেই মানুষটার জন্মদিনে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপারস্টার শাকিব খান।
তিনি বলেছেন, জহির রায়হানের শূন্যতা অপূরণীয়।
জন্মদিনে জহির রায়হানকে স্মরণ করে শাকিবের প্রযোজনা সংস্থা এসকে ফিল্মের ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে।
ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘শুভ জন্মদিন জহির রায়হান। আপনার শূন্যতা অপূরণীয়। কর্মগুণে আপনি হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকবেন। শ্রদ্ধা।’
১৯৩৫ সালের ১৯ আগস্ট ফেনী জেলার মজুপুর গ্রামে জন্ম হয় জহির রায়হানের। মাত্র ৩৭ বছরের স্বল্পায়ু জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে মানবমুক্তির কথা বলেছেন তিনি।
১৯৫৬ সালে শুরু হয় জহিরের চলচ্চিত্র নির্মাণকাজ। ১৯৬১ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র কখনও আসেনি।
এরপর একে একে নির্মাণ করেন কাজল, কাঁচের দেয়াল, বেহুলা, জীবন থেকে নেয়া, আনোয়ারা, সঙ্গম ও বাহানা।
জীবন থেকে নেয়া চলচ্চিত্রে প্রতীকী কাহিনির মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের স্বৈরশাসনকে তুলে ধরা হয়। জনগণকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করা হয় এতে।
লেট দেয়ার বি লাইট নামের একটি ইংরেজি চলচ্চিত্রের নির্মাণ শুরু করেছিলেন জহির। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় তিনি তা শেষ করতে পারেননি।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর জহির কলকাতায় গিয়েছিলেন। সেখানে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার গণহত্যা নিয়ে নির্মাণ করেন ডকুমেন্টারি ফিল্ম স্টপ জেনোসাইড । চলচ্চিত্রটি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
একাত্তরের ডিসেম্বরে বিজয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে পাকিস্তানের এজেন্টরা একে একে ধরে নিয়ে যায় লেখক, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসকসহ দেশের সূর্যসন্তানদের। এদের মধ্যে ছিলেন লেখক শহীদুল্লাহ কায়সার।
ওই বছরের ৩০ জানুয়ারি শহীদুল্লাহর ছোট ভাই জহির রায়হান জানতে পারেন, বড় ভাইকে ঢাকার মিরপুরে রাখা হয়েছে। বড় ভাইয়ের খোঁজে মিরপুরে ছুটে যান জহির। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি।