মাদক মামলায় দুই দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে থাকা আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির মুক্তি দাবি করেছেন দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শনিবার এক স্ট্যাটাসে এ দাবি জানান তিনি।
পরীমনিকে নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে আসিফ লিখেছেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যাগাজিন ফোর্বস এর বিশ্লেষণে মেয়েটা ছিল শোবিজে একজন প্রভাবশালী নারী। বাংলাদেশের ফেসবুক জগতে তার ছিল সর্বোচ্চ কোটি ফলোয়ার। এই নিয়ে মিডিয়াসহ দেশের মানুষের গর্বের শেষ ছিল না। মা আগুনে পুড়ে মরেছেন দুই মাস কষ্ট পেয়ে। ব্যাবসায়িক কারণে মেয়েটার বাবাও খুন হয়েছেন।
‘সাপলুডুর সাপগুলো পুষে মইগুলো বেয়ে বেয়ে মেয়েটা হয়তো একটা জায়গায় পৌঁছেছে। মফস্বলের একটা মেয়ে এত উঁচুতে পৌঁছানোর পেছনে অবশ্যই যোগ্যতা ছিল, রহস্যের তো শেষ নেই।’
অভিনেত্রীদের প্রতি জনসাধারণের মনোভাব তুলে ধরে আসিফ লেখেন, ‘রঙ্গিন দুনিয়ায় সব মেয়েরা খারাপ, আর পুরুষরা মহান। তারকাদের প্রতি সাধারণ মানুষের দেয়া সম্মানকে ব্যাকফুটে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোর একটা গায়েবি অভিশাপ। মেয়েটা দেশের সবচেয়ে বড় আলোচিত ক্রিমিন্যাল হয়ে গেল হঠাৎ করেই? সারা দেশের গলিতে গলিতে এরকম মজায় মত্ত থাকি আমরা ভোগী পুরুষরা।
‘দোষ হয় শুধু মেয়েদের, সমস্ত অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু তারাই। এই মেয়েটা এতটা পথ কাদের শেল্টারে এসেছে, এই রহস্য উন্মোচিত হবে না কখনও। মেয়েটা অবশ্যই ভালে অভিনেত্রী, মেয়েটা দেশকে আরও সার্ভিস দিতে পারত। দেশ নেয়নি, হয়তো সে মুক্তি পেয়ে আন্তর্জাতিক তারকা হয়ে যাবে। নাচতে নেমে ঘোমটা দেয়ার পুরনো কথাটা মনে পরে গেল। আবার লোকাল ভাষায়-ঘোমটার নিচে পোংটা নাচে, এই বাক্যটাও সামনে চলে এলো।
এত মাদকদ্রব্য দেশে আসে কীভাবে, স্ট্যাটাসে সেই প্রশ্নও তুলেছেন ‘ও প্রিয়া’ খ্যাত এই সংগীতশিল্পী। বলেছেন, ‘বেশি লেখার সাহস আমার নাই। আমি নিজেও প্রতিদিন যেকোনো সরকারি বাহিনীর রেইডের অপেক্ষায় থাকি। আকাশের যত তারা,….তত ধারা ফর্মুলাটা খুব মানি। সাত সাগর তেরো নদী পার হয়ে এত মদ আর মাদক দেশে আসে কীভাবে? এর কোনো যুক্তিযুক্ত উত্তর কী রাষ্ট্রের কাছে পাব? ধরা পরে যায় নাদান বিপৎগামী উচ্চাভিলাষী কেউ কেউ।’
অপরাধ প্রমাণের আগে কাউকে অপরাধী বলা অপরাধ উল্লেখ করে আসিফ লেখেন, ‘হরহামেশাই মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রায়ালের শিকার হতে হয় শো বিজের মানুষকে। একটা রমরমা রসাত্মক গল্প কয়দিন চলে। দেশে আসলে এসব ছাড়াও কোটি সমস্যা আছে। চার ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া মেয়েটার কপাল ভালো হাতকড়া পরতে হয়নি, আমি এই দেশে জাতীয় পুরস্কারের সঙ্গে হাতকড়াও উপহার পেয়েছি। একটাই আফসোস- মেয়েটা যে পরিমাণ সিকিউরিটি পেয়েছে, সেটি আমি পাইনি।’
পরীমনির মুক্তির দাবি জানিয়ে লেখেন, ‘আজ ভদ্রলোকেরা আমাকে কমেন্টবক্সে প্রচুর গালি দিন, প্লিজ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই দাবি জানাই- পরীমনির মুক্তি চাই। প্রয়োজনে তাকে রিহ্যাব করানো হোক। সে ভয়ংকর অপরাধী নয়, অভিভাবকহীনতার শিকার একটা লক্ষ্যহীন নৌকা মাত্র।
‘তার কোটি ফলোয়ার আজ হয়ে গেছে দ্বিগুণ হেটার্স। ফলোয়াররা যে বিপদের কারণ হতে পারে- এটা বুঝতে হবে শোবিজের মানুষদের। আজব দেশের সব আজব নাগরিকদের সালাম জানাই। ভালবাসা অবিরাম…।’