মামলা করার আগে একদিন আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ, মামলা করার পর পরীমনিকে একাধিক বার রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার করা ঠিক হয়নি উল্লেখ করে ঢাকাই সিনেমার এই অভিনেত্রীর ‘এক্ষুনি’ মুক্তি দাবি করেছেন সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী।
এ দাবি জানিয়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্টও করেছেন আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ। তিনি লেখেন, ‘আমি দাবি করছি রিমান্ড বাতিল করে এই মুহূর্তে পরীমনিকে নিজ জিম্মায় মুক্তি দেয়া হোক। মামলা করেছেন মামলা চলবে। তদন্ত হোক। তদন্তে যখনই প্রয়োজন হয় পরীমনিকে তার গৃহে বা অন্য যেকোনো জায়গায় তার উকিলের সামনে প্রশ্ন করতে পারেন। পরীমনি দেশ থেকে পালাবেন না, চাইলে ওর পাসপোর্ট রেখে দিন কিন্তু ওকে এখনই মুক্তি দিন। এক্ষুনি।’
ক্রমাগত সাইবার হয়রানি পরীমনির সঙ্গে সবচেয়ে বড় অপরাধ উল্লেখ করে সুপ্রিমকোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘সবচেয়ে বড় অন্যায় যেটা হচ্ছে- কেবল নারী বলেই তাকে ক্রমাগত সাইবার হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। ওর নামে মন্দ কথা ছড়ানো হচ্ছে, ওর ব্যক্তিগত ছবি ভিডিও এসব ছড়ানো হচ্ছে। ওকে নানা ভাষায় জঘন্য সব গালিগালাজ করা হচ্ছে। এইসব করা হচ্ছে তিনি নারী বলেই।’
তিনি আরও লেখেন, ‘কিছু লোক ইচ্ছে করে পরীমনিকে স্ক্যান্ডালাইজ করছে, জঘন্য সব গালাগালি করছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে সরকার কেন ব্যবস্থা নেবে না? সুনামের অধিকার তো আমাদের দেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। এই শিল্পীর সেই অধিকার রক্ষা করা তো সরকারের দায়িত্ব।’
শিল্পী সমিতির সমালোচনা করে ইমতিয়াজ মাহমুদ লেখেন, ‘ঐ যে একটা সমিতি আছে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, ঐ সমিতিটার নাম থেকে শিল্পী শব্দটা কেটে দিন। ওরা শিল্পীও না শিল্পীর জাতও না। সমিতি করার অধিকার ওদের আছে, কিন্তু সমিতির নামের সঙ্গে শিল্পী শব্দটি যোগ করে রাখার অধিকার ওদের নাই। কেননা তাতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা হয়।’
অনলাইনে ফেসবুকে টুইটারে নিউজ পোর্টালে সর্বত্র যারা পরীমনিকে গালি দিয়েছে তাদের সকলকে চিহ্নিত করে সাইবার হয়রানির দায়ে বিচার করার দাবি জানান ইমতিয়াজ মাহমুদ।
এ কথার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক রাজিব নূর। তিনিও তার ফেসবুকে আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদের কথার কিছু অংশ তুলে ধরেছেন এবং পরীমনিকে এক্ষুনি মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
তার আগে রাজিব নূর লেখেন, ‘পরীমনি ভীমরুলের চাকে ঢিল দিয়েছেন-বোট ক্লাব কাণ্ডের পর কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ মাত্রই বুঝতে পারছিলেন এটা। শুধু পরীমনিই বুঝতে পারেননি। নিজের ঘরে রাজ্যের মদ আর মাদক নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কবে ওকে আটক করতে আসা হবে। চিত্রনাট্যটা খুব দুর্বল। শুধু মদ পাওয়া গেলে এবং লাইসেন্স নবায়ন না করার অপরাধে কয়েক হাজার টাকার অর্থদণ্ড হতে পারত। তাই দুর্বল চিত্রনাট্যেও আইস আর ইয়াবার প্রয়োজন হয়েছে মনে হচ্ছে। যাই হোক, এ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হোক। অপরাধী হলে শাস্তি হোক।’
পরীমনির অভিনয় করতে যাবার কথা ছিল প্রীতিলতা নামের সিনেমার, কিন্তু চলমান পরিস্থিতির কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। সিনেমাটি পরিচালনা করছেন রাশিদ পলাশ।
তিনি তার ফেসবুক পেজ থেকে পরীমনির জন্য ন্যায় বিচারের দাবি করেছেন। টিম প্রীতিলতার ব্যানারে ‘জাস্টিস ফর পরীমনি’ লিখে রাশিদ পলাশ ও প্রীতিলতা সিনেমা সংশ্লিষ্ট সবাই তার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।