চিত্রনায়িকা পরীমনির পৃষ্ঠপোষক এক নারী নজরদারিতে- গোয়েন্দা পুলিশের কাছ থেকে এমন বক্তব্য আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চলচ্চিত্র পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীকে আটক করেছে গোয়েন্দাদের একটি দল।
শুক্রবার বিকেলে চয়নিকা রাজধানীর বাংলামোটরের সোনারগাঁও রোডে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে গিয়েছিলেন এক অনুষ্ঠানে। আর সেই ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে থাকেন পুলিশ সদস্যরা।
তিনি অনুষ্ঠান শেষে বের হলে তার গাড়ি ঘিরে ফেলেন গোয়েন্দারা। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বুধবার পরীমনি আটক হওয়ার পর তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আরও দুইজনসহ মোট তিন জনকে আটক করা হয়। মাদকের মামলায় পরদিন গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
শুক্রবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (দক্ষিণ) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, পরীর পৃষ্ঠপোষক এক নারীকে তারা নজরদারিতে রেখেছেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সেই নারী যে চয়নিকা, সেই বিষয়ে সেই সময়ই ধারণা করা হচ্ছিল। তবে হারুন তার নাম প্রকাশ করেননি।
এর কিছুক্ষণ পরেই চয়নিকাকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান জোন আটক করে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা বিভাগের একজন সহকারী কমিশনার।
সে সময় চয়নিকার গাড়িতে তার ছেলে অনন্য প্রতীকও ছিল। তিনি পরে বাসায় ফিরে যান।
চয়নিকার স্বামী অরুণ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। আমি শুধু সিদ্ধান্ত জানতে চাই। তাকে কেন নিয়ে যাওয়া হলো, সেখানে এখন কী হচ্ছে।
তবে চয়নিকাকে সেখান থেকে মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়নি। তাদের গাড়ি যায় মতিঝিলের দিকে। তবে সেখানে না থেমে গাড়ি চলে যায় কমলাপুরের দিকে।
সেখান থেকে গাড়ি আসে রাজারবাগের দিকে। পেছতে থাকা নিউজবাংলা ও আরও একটি গণমাধ্যমের গাড়ি আর আগাতে দেয়া হয়নি। চয়নিকার বিষয়ে বাকি তথ্য জানতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন কর্মকর্তারা।
এরপর সাত নয়টার দিকে চয়নিকাকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়।
দেশের নাট্য জগতে চয়নিকার আনাগোনা ২০ বছরের। তবে সম্প্রতি তিনি চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছেন। তার ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমা বানাতে গিয়ে পরীমনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন তারা।
চয়নিকার পরিচালনায় পরীমনির কাজ করার কথা ছিল ‘অন্তরালে’ নামে ওয়েব সিরিজে।
গত জুনে পরীমনি ঢাকা বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ আনার পর চয়নিকার যে ভূমিকা, তাতে তিনি যে পরীমনির সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন, তা স্পষ্ট হয়।
পরী সংবাদ সম্মেলনের সময় যখন ডুকরে কাঁদছিলেন, তখন চয়নিকা তাকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন। পরী যখন চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমি বলতে পারতেছি না’, তখন চয়নিকা তাকে বলছিলেন, ‘তোমাকে বলতে হবে আম্মু। না বললে ওরা জানবে কেমন করে।’