মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন নজরুল ইসলাম রাজ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ মামলায় তাকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গ্রেপ্তার হওয়া রাজ নিজেকে পরিচালক-প্রযোজক বলে পরিচয় দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো সিনেমা পরিচালনা বা প্রযোজনা করেননি তিনি।
চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকেই নিশ্চিত করেছেন তিনি সিনেমা বা নাটক পরিচালনা করেননি।
তবে প্রযোজনা করেছেন নাটক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট একজন নিউজবাংলাকে জানান, রাজ অনেক নাটক প্রযোজনা করেছেন। তবে কাগজে-কলমে রাজ চলচ্চিত্র প্রযোজক নন।
নাম ব্যবহার না করে তিনি সিনেমায় লগ্নি করেছেন বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।
প্রযোজক নেতা আলিমুল্লাহ খোকন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সদস্য না। তবে তিনি প্রযোজক হওয়ার জন্য দুই বছর আগে আবেদন করেছিলেন। বিশেষ আইনে এই আবেদন করেন তিনি।’
বিশেষ আইনটা কেমন, জানতে চাইলে খোকন বলেন, ‘আবেদন করার ছয় মাসের মধ্যে কোনো সিনেমা প্রযোজনা করলে কম টাকা জমা দিয়েই প্রযোজক সমিতির সদস্য পদ পাওয়া।’
কিন্তু এই বিশেষ সুবিধাটাও নেননি রাজ। আবেদন জমা থাকলেও হতে পারেননি প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সদস্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে বলেছেন ও লিখেছেন যে নজরুল ইসলাম রাজ ভালোবাসা সীমাহীন সিনেমার প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত।
এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে পরিচালক গোলাম মোস্তফা শিমুল ভালোবাসা সীমাহীন সিনেমার সেন্সর সার্টিফিকেট প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সিনেমাটি সেন্সরের জন্য আবেদন করেছেন মো. আতিকুল ইসলাম এবং প্রযোজনাও করেছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান জানান, নজরুল ইসলাম রাজ পরিচালক সমিতিরও সদস্য না।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সকলের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, পরীমনির সঙ্গে আটককৃত নজরুল রাজকে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে বলা হচ্ছে, তিনি কোনো চলচ্চিত্র পরিচালক নন। তাকে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে নাম ব্যবহার না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি।’
নাটক-সিনেমায় অভিনয় করেছেন নজরুল ইসলাম রাজ। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চালু করেন নাজমুল ইসলাম রাজ।
বৃহস্পতিবার র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজ ১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন। ঢাকায় গ্র্যাজুশেন করেন বলে দাবি করেন রাজ। পরে বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন এবং শোবিজেও তার পদচারণ শুরু হয়।
পরীমনির সিনেমায় কাজ করতে রাজ সাহায্য করেছেন বলে র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। পরীমনির বাসায় যে মিনি বারের কথা র্যাব জানিয়েছে, সেখানে নিয়মিত মদ সাপ্লাই করতেন নজরুল ইসলাম রাজ।