ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনির বাসায় অভিযানে গেছে র্যাব। অভিযানের কিছুক্ষণ আগে ফেসবুক লাইভে পরীমনি জানিয়েছিলেন, কে বা কারা তার বাসার দরজায় ধাক্কাধাক্কি করছেন।
এ বিষয়ে র্যাব সদর দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিনেত্রী পরীমনির বাসায় অভিযান চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তার বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।’
একই তথ্য জানান বাহিনীটির গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খানও।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের একটি টিম সেখানে গেছে। তারা পরীমনির বাসায় অভিযান তল্লাশি চালাচ্ছে। তল্লাশিতে এখনও কিছু পাওয়া গেছে কি না, সেটা বলতে পারছি না। অভিযান ও তল্লাশি চলমান।’
এর আগে লাইভে পরীমনি বলেছিলেন, ‘কাকে ফোন দিব বুঝতেছি না। থানা থেকে কেউ ফোন ধরছে না।
‘আমি লাইভ কাটব না। যদি আমার হাত থেকে কেউ ফোন নিয়ে নেয়, বুঝবেন আমার কিছু একটা হয়েছে।’
পরীমনির বাসায় র্যাবের অভিযান। ছবি: সাইফুল ইসলামলাইভে শোনা যাচ্ছিল, দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা কেউ একজন বলছিলেন, ‘ঘরে আসতে দেন। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক।’
এক পর্যায়ে দরজা খুলে দেন পরীমনি। বন্ধ হয়ে যায় লাইভ।
রাজধানীর বোট ক্লাবে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তুলে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আলোচিত হন পরীমনি।
ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলাও করেন এ অভিনেত্রী। মামলায় ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসির ইউ মাহমুদ এবং তার সহযোগী তুহিন সিদ্দিকী অমিকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মামলাটিতে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয় নাসির ও অমিকে। রিমান্ড শেষে গত ২৯ জুন তারা জামিন পান।
পরীমনির মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, অমি ও বনিসহ দুটি গাড়িতে উত্তরার দিকে যান।
ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়, ‘পথিমধ্যে অমি বলে বেড়িবাঁধে ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তার ২ মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো আমরা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে গাড়ি দাঁড় করাই। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়।
‘তখন অমি ভেতরে যাই এবং অমি অনুরোধ করে এখানের পরিবেশ অনেক সুন্দর; তোমরা নামলে নামতে পারো। ইতোমধ্যেই আমার ছোট বোন বনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলে আমরা ঢাকা বোট ক্লাবে প্রবেশ করে বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করি। টয়লেট হতে বের হতেই ১ নং বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদেরকে ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন।’
ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ব্যবসায়ী নাসির ইউ আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমনি-ফাইল ছবিএজাহারে আরও বলা হয়, ‘আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ ১ নং আসামি মদ্যপান করার জন্য জোর করেন। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে ১ নং আসামি জোর করে আমার মুখের মধ্যে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই। ১ নং আসামি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন ও আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
‘১ নং আসামি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ১ নং আসামিকে বাধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে নীলাফোলা জখম করে। আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিতে গেলে আমার ব্যবহৃত ফোনটি টান মেরে ফেলে দেয়।’