থেমে গেল বাংলাদেশের গণসংগীতের পুরোধাব্যক্তিত্ব ফকির আলমগীরের কণ্ঠ। দরাজ গলায় আর গাইবেন না ‘নাম তার ছিল জন হেনরি’ ও ‘ও সখিনা গেছস কি না ভুইলা আমারে’-এর মতো কালজয়ী গান।
শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭১ বছর বয়সে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন বরেণ্য এই সংগীতশিল্পী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউনাইটেড হাসপাতালের গণমাধ্যম কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান শুভ।
১৮ জুলাই থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে ছিলেন ফকির আলমগীর। এর আগে করোনা পজিটিভ হওয়ায় ১৫ জুলাই রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
একুশে পদকপ্রাপ্ত ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘এ দেশের সংগীতাজ্ঞনে বিশেষ করে গণসংগীতকে জনপ্রিয় করে তুলতে তার ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার তার রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এ ছাড়া আরও শোক জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
ফকির আলমগীরের জন্ম ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে ।
১৯৬৬ সালে তিনি কালামৃধা গোবিন্দ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন।
জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।
১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপের সদস্য হিসেবে ছাত্ররাজনীতিতে যোগ দেন ফকির আলমগীর। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সংগীতবলয়ে প্রবেশ করেন তিনি।
১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ফকির আলমগীর একজন শব্দসৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।