সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, করোনা মহামারির সময় রাজধানীর কাঁটাবনে পোষা প্রাণীর মার্কেটে চার শতাধিক পাখিসহ কিছুসংখ্যক কুকুর, বিড়াল, খরগোশ ও গিনিপিগ মারা গেছে। এ খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। বলেছেন, ‘এই মৃত্যুর কারণ স্রেফ অবহেলা।’
শনিবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জয়া লেখেন, ‘করোনা মহামারির দুঃসহ এই সময় আমাদের প্রত্যেকটি পরিবারের মধ্যেই কোনো না কোনো অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করেছে। প্রায় সবারই মধ্যে কোনো না কোনো তাজা ক্ষত আছে। মানুষের কষ্টের কোনো সীমা নেই।
‘মানুষের বাইরে মানুষের ওপর নির্ভরশীল প্রাণীগুলোরও কষ্টের কত খবর যে আমরা পাচ্ছি। কিন্তু একটা খবরে মনটাকে আর বশে রাখা গেল না। ১ জুলাই থেকে যে লকডাউন হলো, তাতে ঢাকার কাঁটাবনের পোষা প্রাণীর বাজারে অনেকগুলো পশুপাখি নির্মম মৃত্যুর শিকার হলো।’
জয়া আহসান বলেন, ‘পোষা প্রাণীর মালিকরা এই পুরো লকডাউনে তাদের দোকানপাট রুদ্ধ করে রেখেছিলেন। আলো-বাতাসহীন দমবন্ধ অন্ধকারে ৪০০ পাখি আর ডজনের পর ডজন কুকুর, বিড়াল, খরগোশ, গিনিপিগ তড়পাতে তড়পাতে মারা গেছে।’
যারা ব্যবসা করছেন তাদের মনে এই প্রাণীগুলোর জন্য কোনো মায়া আছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন জয়া। লেখেন, “এই মৃত্যুর কারণ স্রেফ অবহেলা। যারা এসব পোষা প্রাণীর বাজার বসিয়েছেন, তাদের মনে মায়া নেই? মায়া যদি না-ও থাকে, আইনের প্রতি ন্যূনতম কোনো শ্রদ্ধা নেই? তারা পোষা প্রাণীর কারবারে নেমেছেন, ‘প্রাণীকল্যাণ আইন ২০১৯’-এ প্রাণীদের প্রতি যেসব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, তা মেনে চলার বাধ্যবাধকতা তাদের নেই?”
প্রাণীগুলোর মৃত্যুতে কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি জয়া। বলেছেন, ‘খবরটি শিরোনাম হওয়ার পর কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছে। লকডাউনে তারা প্রতিদিন সকালে-সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টা করে দোকানের শাটার খোলা রাখার আদেশ দিয়েছে।
‘কিন্তু এটুকুই কি যথেষ্ট? যে প্রাণীগুলো মর্মান্তিকভাবে মারা গেল, তার দায়ভার কেউ নেবে না? এখানে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ ও দায়ী দোকান মালিকদের অবশ্যই আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া দরকার।’
আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে জয়া লেখেন, ‘তবু শাস্তি তো আর শেষ কথা নয়। পোষা প্রাণীর বাজারে তাদের প্রতিপালনের জন্য আইনের সম্পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার। না হলে এ বাজার তুলে দেয়াই কর্তব্য। প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি আমরা আর কবে সংবেদনশীল হব!’
প্রাণ-প্রকৃতি, পরিবেশ ও পশুপাখির প্রতি জয়ার ভালোবাসা বরাবরই। এসব বিষয়ে নানা অসংগতি নিয়ে ব্যাপক সোচ্চার এই অভিনেত্রী। শুধু তা-ই নয়, করোনার প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের সময় রাস্তায় রাস্তায় অভুক্ত কুকুরদের খাবারের ব্যবস্থা করেন তিনি।