কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার প্রতিযোগিতা করা সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর। সিনেমাটির অন্যতম প্রযোজক সিঙ্গাপুরের জেরেমি চুয়া।
বুধবার সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে উৎসব শুরুর দিনে অর্থাৎ ৬ জুলাই এ প্রযোজক কথা বলেন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ভ্যারাটির সঙ্গে। যেখানে একটি অংশ জুড়ে ছিল সিনেমাটির জন্য প্রযোজক খোঁজা ও নির্মাণ খরচ পাওয়ার বিষয়টি।
জেরেমি চুয়ার কাছে প্রতিবেদক ক্যারল হোর্স্ট জানতে চেয়েছিলেন, সিনেমাটি নির্মাণের জন্য খরচ সংগ্রহ কতটা কঠিন ছিল?
উত্তরে জেরেমি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার আশপাশে এবং স্থানীয় বা আঞ্চলিক কোনো ফান্ড না থাকায় সিনেমাটি নির্মাণ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। শুরুতে সাদ আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয় রাজিব মহাজনের সঙ্গে। তিনি ঢাকার তরুণ ও নবীন প্রযোজক।
‘রাজিব ও আমার একসঙ্গে প্রথম পদক্ষেপ ছিল বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এশিয়ান সিনেমা ফান্ডে স্ক্রিপ্ট তৈরির জন্য ফান্ডের আবেদন করা। সেখানে আমরা ২০১৭ সালে পুরস্কৃত হই।
‘এরপর আমরা অনেক মাস ধরে নতুন ধরনের গল্পের আইডিয়া খুঁজেছি। ২০১৮ সালে আমরা একটি চিত্রনাট্যের খসড়া তৈরি করতে সক্ষম হই এবং সেটা আমাদের কাছে বেশ ভালো মনে হয়।
‘সেটি নিয়ে আমরা বুসানের এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে অংশ নেয়ার জন্য আবেদন করি।
বাঁ থেকে- আব্দুল্লাহ মোহম্মদ সাদ, সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়া ও রাজিব মহাজন। ছবি: সংগৃহীত
‘এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে আমাদের অনেক প্রযোজক ও বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা হয়। তারা আমাদের ভালো ভালো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। ইউরোপের লগ্নি পাওয়ার জন্য সেখানে আমাদের কথা হয়েছিল ফ্রান্স ও নরওয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। তবে শেষ পর্যন্ত ইউরোপের ফান্ড আমরা পাইনি।
‘এরপর বাংলাদেশে ব্যক্তিগত অর্থায়ন খুঁজতে শুরু করি আমরা। বেশ কয়েকটি প্রস্তাব আসে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হকের সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিই। তিনি আমাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রচুর সুযোগ দিয়েছেন এবং তিনি নিজেও সৃজনশীল কাজ পছন্দ করেন।
‘এ কাজে ক্রু, স্বেচ্ছাসেবক এবং পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি।
‘প্রোডাকশনের পর আমরা পোস্ট-প্রোডাকশনের খরচ চেয়ে আবেদন শুরু করি এবং সাড়া পাই দোহা ফিল্ম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে। ইনস্টিটিউটের ২০২০ সালের পোস্ট প্রোডাকশনের অনুদানটি পাই আমরা।
‘শেষে আমাদের ফ্রেন্স সহযোগী প্রযোজক জোহান চ্যাপেল সিনেমাটি বিতরণের খরচ বহন করেন।’
রেহানা মরিয়ম নূর সিনেমার সিঙ্গাপুরের প্রযোজক জেরেমি চুয়ার সঙ্গে সাদের পরিচয় হয় ২০১৬ সালে সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। সাদের প্রথম সিনেমা লাইভ ফ্রম ঢাকা অংশ নিয়েছিল সেই উৎসবে। তখনই সিনেমার গল্প, পরিচালনা, সম্পাদনা পছন্দ হয় জেরেমির।