বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘আমি নিয়মিত হতে চাই, নির্মাতাদেরও এটা চাইতে হবে’

  •    
  • ৩ জুলাই, ২০২১ ১০:৫৮

আমি যে অভিনয় করতে চাচ্ছি, আমার চাওয়াটাকে সবার সাপোর্ট করতে হবে। দর্শকরা বিষয়টা হয়তো জানেন না, তারা হয়তো মনে করেন যে শিমু আপু কাজ করছে না। আমি একজন পরীক্ষিত অভিনেত্রী, আমার পক্ষে ফোন করে কাজ চাওয়া সম্ভব না, আমার পক্ষে এটা সাজেও না।

আসন্ন ঈদে একটি নাটকে অভিনয় করেছেন সুমাইয়া শিমু। তাতেই চারদিকে শোরগোল। ফিরেছেন ফিরেছেন বলে রোল উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে গণমাধ্যম, সবখানেই শিমুর ফেরার গল্প।

এ থেকেই বোঝা যায় দর্শকের পছন্দের অভিনেত্রীর তালিকায় এখনও আছেন তিনি। তাই তার ফেরাতে চারদিকে এত কথা এত গল্প।

অনেক দিন ধরেই নাটকে অনিয়মিত শিমু। অনেক আগে থেকেই অভিনয় করছিলেন না। দুই বছর আগে একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তখনও তার ফেরার গল্পে মেতেছিলেন দর্শকরা।

কিন্তু কেন এই বিরতি দিয়ে দিয়ে ফিরে আসা? অভিনয়ে অনিয়মিত? তিনি কি অন্য কিছু করতে চান? কেমন করে কাটছে সময়। এমন সব বিষয় নিয়ে শিমু কথা বলেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে।

অনেক দিন পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন। কেমন লাগছে?

এটা দর্শকরা বিশ্বাস করবে কি না, জানি না। কিন্তু আমি সত্যি বলছি, আগেও কোনো নাটকের প্রস্তাব এলে যেমন লাগত, এখনও আমার ঠিক একই রকম এক্সাইটমেন্ট কাজ করে। যখন ক্যামেরার সমানে দাঁড়াই, কাজটা ভালো করে করার স্পৃহা থাকে।

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো তো নতুন কিছু না, তবে অনেক দিন পর কাজ করলাম, ভালো লেগেছে। বিরতিতে বুঝতে পেরেছি যে, আমি অভিনয় করতে চাই।

আপনার ভক্ত-দর্শকদের একটাই প্রশ্ন। সেটি হলো, আপনি অভিনয়ে অনিয়মিত কেন?

এই প্রশ্নটা অনেক দিন থেকেই আমি শুনছি। আমার ফেসবুক পেজে কোনো ছবি দিলে সেখানে অনেকেই মন্তব্য করে জানতে চান, আমি কবে নাটক করব। এই সাপোর্ট ও ভালোবাসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

কিন্তু আমি চেয়েছিলাম, কিছু রিয়েল কাজ করতে। আমার অভিনীত নাটকে যেমন আমি ভালো বার্তা দেয়ার চেষ্টা করেছি, আমার ইচ্ছা ছিল বাস্তব জীবনেও যেন তেমন ভালো কিছু করতে পারি।

সে জন্য আমি বেটার ফিউচার ফর ইউমেন নামের একিটি সামাজিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করি। এখন বেটার ফিউচার কমিউনিকেশন নামের একটি যোগাযোগ উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানেরই ফাউন্ডার ও চেয়ারম্যান আমি।

বেটার ফিউচার ফর ইউমেন থেকে নারীদের নিয়ে কাজ করা হয়। আমরা টেকনোলজিকে গুরুত্ব দিয়ে নারীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে কাজ করি।

এসব কাজ করতে বেশ কিছু সময় গেছে, এখনও যায়।

তাহলে কি আপনি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যস্ত থাকেন বলেই নাটকে কাজ করতে পারেন না?

না, বিষয়টা এমন না। হ্যাঁ, কিছু সময় তো আমি ব্যস্ত থাকি এসব কাজ নিয়ে। তবে আমার ফ্রি সময়ও আছে।

সেই ফ্রি সময়ে আপনার কি নাটকে অভিনয় করার সুযোগ ছিল? আপনাকে কিন্তু একেবারেই পাওয়া যায়নি।

হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। ফ্রি টাইমে আমি নাটক করতে পারতাম, কিন্তু করা হয়নি। আসলে একটা নতুন কাজ শুরু করলে ঠিক বোঝাই যায় না যে অন্য আরেকটি কাজে কতটা গ্যাপ পড়ে গেল।

আমি এটাও স্বীকার করছি যে, আমি হয়তো তখন কিছু বিষয় সিরিয়াসলি নিইনি। কিন্তু কেউ যদি বলে আপনি তো অনেক কাজই করলেন, কোন কাজটি আপনার বেশি পছন্দ? আমি বলব অভিনয়ের কাজটাই আমার কাছে সবচেয়ে আনন্দের।

যে কাজটি সবচেয়ে আনন্দের সেই কাজটিতেই আপনি অনিয়মিত। বিষয়টা কেমন হয়ে গেল।

এখনকার পরিপ্রেক্ষিতে যদি বলি, আমি অভিনয় করতে চাইলেই তো আর অভিনয় করতে পারব না। বিরতির কারণে আমি কিছুটা দূরে চলে গেছি। এখনকার অনেক পরিচালক আমাকে চেনেন না। আমিও অনেককে চিনি না।

আমি যে অভিনয় করতে চাচ্ছি, আমার চাওয়াটাকে সবার সাপোর্ট করতে হবে। দর্শকরা বিষয়টা হয়তো জানেন না, তারা হয়তো মনে করেন যে শিমু আপু হয়তো কাজ করছে না।

আমি একজন পরীক্ষিত অভিনেত্রী, আমার পক্ষে ফোন করে কাজ চাওয়া সম্ভব না, আমাকে সাজেও না।

আমি যে কাজ করতে চাচ্ছি, আমাকে কাজে লাগানোর দায়িত্বটা কিন্তু পরিচালক-প্রযোজক বা গল্পকারদের। তাদের সবার সঙ্গে যখন ভালো কম্বিনেশন হবে তখনই কিন্তু সুন্দর কাজ নিয়ে দর্শকদের সামনে আসতে পারব।

এ ছাড়া গল্পের বিষয় আছে। সব চরিত্র এখন হয়তো আমার সঙ্গে যাবে না। আমি নিজেও হয়তো সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারব না। আমাকে বুঝে করতে হবে।

তাই আমি বলতে চাই, এখানে আমার একার তেমন কিছু করার নেই।

আপনি যখন অভিনয়ে নিয়মিত ছিলেন, তখন আপনি আপনার প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে যতটা যত্নবান ছিলেন, এখন হয়তো ততটা নন। যদি এই ধারণা ঠিক হয়, তাহলে তো দর্শককেও কম গুরুত্ব দেয়া হয়।

আমি যখন নাটকের কাজে যুক্ত হই তখন কিন্তু অন্য কোনো কাজ করি না, ফর ইয়োর কাইন্ড ইনফরমেশন। আমার ফুল কনসেনট্রেশন থাকে নাটকের কাজে। কাজটি করার জন্য যে যে এফোর্ট দিতে হয়, আমি সেগুলো দিই।

এটা আমি বলছি বলে হয়তো অনেকে মনে করতে পারেন যে, আমি তো আমার মতো করেই বলব। কিন্তু আপনারা যদি আমার সঙ্গে কাজ করেছেন এমন পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেন, আমার মনে হয় এই ভুল সবার ভেঙে যাবে।

আপনি লেখাপড়ায় অনেক ভালো। পিএইচডি করেছেন। আরও অনেক ভালো ভালো কাজ করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে আপনার। সেগুলো নিয়ে কী ভাবছেন?

আমি লেখাপড়া করেছি সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে এবং নাট্যকলায় করেছি পিএইচডি। আমার গবেষণার বিষয় ছিল ‘শিল্প ও আর্থসামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের টেলিপ্লে অভিনয়ে নারীর ভূমিকা।’

আমি কিন্তু যখন অনার্স, মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডি করেছি তখন কিন্তু এই ভেবে করিনি যে এসব ডিগ্রি দিয়ে এটা করব সেটা করব। আমার তখন মনে হয়েছে, আমার ডিগ্রি নিতে হবে, এখনই সুযোগ, আমি করেছি।

এখন যেটা হয়েছে, আমি অভিনয় ছাড়াও সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছি। আমার এগিয়ে যাওয়ার এগুলো একেকটা স্টেপ। এখানে আমার শিক্ষা বিভিন্নভাব সাহায্য করছে।

আমার দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, এখান থেকে কাজ হবে। এগুলো আরও বড় করতে চাই। নতুন নতুন শাখা চালু করতে চাই। এভাবে আমার এগিয়ে যাবার পরিকল্পনা।

এদিকে তো এখন ওয়েব কনটেন্ট হচ্ছে। অনেকেই কাজ করছেন। আপনি পরীক্ষিত অভিনেত্রী। এখানে আপনার বেশি বেশি কাজ করার সুযোগ আছে বলে কি আপনার মনে হয়?

অবশ্যই। ওয়েব সিরিজ, ফিল্ম বা কনটেন্টে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, একই সঙ্গে ভালো অভিনয়শিল্পীও প্রয়োজন হচ্ছে। সেখানে যদি কাজ করার সুযোগ পাই অবশ্যই করব।

আমি অনেক আগ্রহী ওটিটিতে কাজ করতে। যারা আমাকে চেনেন, তারা তো চেনেনই। অনেকে যে আমার কাজ পছন্দ করেনে, সেটাও জানান। কিন্তু নতুন যারা দর্শক, তাদের অনেকেই আমাকে চেনেন না। আমি তাদের কাছেও পরিচিত হতে চাই।

নতুন কোনো কাজে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি।

কয়েকটি কাজের ব্যাপারে কথা চলছিল। কিন্তু লকডাউনের কারণে সেগুলো এগোচ্ছে না। এখন অপেক্ষা করতে হবে। পরিস্থিতি স্বভাবিক হলে হয়তো অভিনয়ে বেশি মনোযোগ দেব।

এ বিভাগের আরো খবর