হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই ফেসবুক লাইভে এসে নিজের শারীরিক অবস্থা এখন ভালো বলে জানালেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বললেন, ‘ইংল্যান্ডের থেকেও ভালো, বাংলার সরকারি হাসপাতাল।’
রোববার ভোররাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় সোমবার কবীর সুমনকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বৃহস্পতিবার ডক্টরস ডেতে ফেসবুক লাইভে এসে চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে কবীর সুমব বললেন, ‘আগের থেকে অনেকটা সুস্থ আছি।’
রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘হল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি কিন্তু এই দেশগুলোর হাসপাতালের থেকে অনেক এগিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা।’
এরপর তাকে একটু কাশতে দেখা যায়। তখন সুমন বলেন, ‘ভয় পাবেন না। আমি ঠিক আছি। রবিবার আমি ঢোক গিলতে পারছিলাম না। খাওয়া-দাওয়া তো দূরের কথা। এরপর আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক দিবসের দিন বলছি, আমাকে যারা সুস্থ করে তুলেছেন, তাদের ধন্যবাদ।’
এদিন বামফ্রন্ট সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাম জমানায় চিকিৎসা পরিকাঠামো তলানিতে নেমে গিয়েছিল। তৃণমূল সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আমি অসুস্থতার জন্য বিদেশের হাসপাতালে ভর্তি থেকেছি । কিন্তু এ ধরনের চিকিৎসা পাইনি। এ রাজ্যের হাসপাতালের চিকিৎসায় রয়েছে মানবিক স্পর্শ, যা বাংলার চিকিৎসাকে আরও এগিয়ে রাখে।’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং তৃণমূলের বিধায়ক মদন মিত্রকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।
নব্বইয়ের দশকে বাংলা আধুনিক গানের জগতে আলোড়ন তোলা শিল্পী কবীর সুমন বার্ধক্যজনিত সমস্যার পাশাপাশি অ্যাজমার সমস্যায় ভুগছেন। তার চিকিৎসায় ডা. সৌমিত্র ঘোষের নেতৃত্বে দুই সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
সুমনের ফুসফুসে সংক্রমণ থাকায় তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হচ্ছে। টেস্ট রিপোর্ট হাতে পেলে চিকিৎসকরা পরবর্তী ধাপের চিকিৎসা করবেন।
কিংবদন্তি চিকিৎসক ও পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিন ১ জুলাই। তিনি একাধারে স্বাধীনতা সংগ্রামী, রাজনীতিবিদ এবং চিকিৎসক।
কিংবদন্তি এই চিকিৎসকের চিকিৎসা পরামর্শ নিতেন মতিলাল নেহেরু, মহাত্মা গান্ধী, জহরলাল নেহেরু থেকে ইন্দিরা গান্ধী পর্যন্ত।
১৯১১ সালে ইংল্যান্ড থেকে এমআরসিপি এবং এফআরসিএস উপাধি অর্জনের পর কলকাতার ক্যাম্বেল মেডিক্যাল স্কুলে (বর্তমান নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ) শিক্ষকতা ও চিকিৎসা পেশা শুরু করেন চিকিৎসক বিধানচন্দ্র রায়।
১৪ বছর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় রাজ্যের পাঁচটি নতুন শহর প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। কল্যাণী, দুর্গাপুর, বিধাননগর (সল্টলেক), হাবরা, অশোকনগর - কল্যাণগড় তার সময়ে তৈরি।
পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপক উন্নতি হয়েছিল তার সময়ে। এজন্য পশ্চিমবঙ্গের রূপকার বলা হয় বিধান চন্দ্র রায়কে। দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ভারতরত্নেও ভূষিত হন তিনি। ১ জুলাই তার জন্মদিন আবার ওই একই দিনে তার মৃত্যুও হয়।
চিকিৎসক বিধানচন্দ্র রায়ের সম্মানে ভারততে ১ জুলাই ডক্টরস ডে হিসেবে পালিত হয়। সংগীত শিল্পী কবীর সুমন এই বিশেষ দিনে করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের অবদান স্মরণ করে ফেসবুক লাইভে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।