বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেন্সর পেতে লাগবে পরিচালক সমিতির সনদ: পক্ষে-বিপক্ষে

  •    
  • ৭ জুন, ২০২১ ১৭:২০

স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা বেলায়াত হোসেন মামুন লিখেছেন, ‘অদ্ভুত অসুস্থ একটি দাবি৷ একটি বেসরকারি সমিতি মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি করছে দেশের সকল চলচ্চিত্রকর্মীকে তাদের কাছে বর্গা দিয়ে দেয়ার! আবদারের কোনো সীমা পরিসীমা নেই।’

পরিচালক সিমিতির নবনির্বাচিত কমিটি ৬ জুন সাক্ষাৎ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে। চলচ্চিত্রের নানা বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে সভায়। পরিচালক সমিতির পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে দেয়া হয়েছে পাঁচটি প্রস্তাবনা।

প্রস্তাবগুলো হলো-

১) মন্ত্রণালয় ও সমিতির প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন

২) সেন্সর বোর্ডে সমিতির প্রতিনিধিত্ব

৩) যেকোনো চলচ্চিত্র সেন্সরের জন্য পরিচালক সমিতির সনদপত্র বাধ্যতামূলক করা

৪) চলচ্চিত্রের বিভিন্ন কমিটিতে সমিতির প্রতিনিধিত্ব

৫) টেলিভিশনে পরিচালকের নামসহ পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র প্রদর্শন

এই পাঁচটি প্রস্তাবের মধ্যে ৩ নম্বর প্রস্তাব অর্থাৎ যেকোনো চলচ্চিত্র সেন্সরের জন্য পরিচালক সমিতির সনদপত্র বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্র মহলে শুরু হয়েছে সমালোচনা।

স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে প্রস্তাবটি নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন।

স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুনের ফেসবুক পোস্ট।

তিনি লিখেছেন, ‘অদ্ভুত অসুস্থ একটি দাবি৷ একটি বেসরকারি সমিতি মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি করছে দেশের সকল চলচ্চিত্রকর্মীকে তাদের কাছে বর্গা দিয়ে দেয়ার! আবদারের কোনো সীমা পরিসীমা নেই।

‘স্বাধীন দেশের মানুষ একটি সমিতির সনদ নিয়ে তারপর চলচ্চিত্র নির্মাণ করবে? সেই সমিতি যদি সনদ না দেয় তবে ছবি নির্মাণ করা যাবে না? এই ধরনের ফ্যাসিবাদী বাসনা যে সমিতি ধারণ করে সেটা মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার জন্য খুবই বিপদজনক।’

চলচ্চিত্রকর্মী ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পর্ষদ- বরিশাল বিভাগের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান এই নিয়মকে ‘চলচ্চিত্র সমিতির সনদ নাকি এতিম খানার সনদ’ বলে অভিহিত করেছেন।

চলচ্চিত্রকর্মী হাবিবুর রহমানের ফেসবুক পোস্ট।

তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসের একটি জায়গায় লিখেছেন, ‘আমি স্বাধীনভাবে আমার সিনেমাটি বানাবো তাতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির অনুমতি লাগবে কেন? নির্মাণে বা কোনো কাজেই তাদের সমিতিকে ব্যবহার করি নাই। তবে কেন আমি তাদের গোয়ালের বলদ হয়ে থাকব।’

বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক এবং নির্মাতা নোমান রবিন। তিনি নিজেকে স্বাধীন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে দাবি করেন। সেন্সর পদ্ধতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রশ্ন তুলতে দেখা গেছে তাকে।

নোমান রবিন বলেন, ‘আমি একই সঙ্গে একজন স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নির্বাচিত কমিটির একজন সম্পাদক। আমি যখন সমিতির একটি বভাগের সম্পাদক, তখন আমাকে কাজগুলোকে সমর্থন করতে হবে। তবে অবশ্যই যুক্তি দিয়ে।’

প্রস্তাবনাটি বোঝাতে রবিন বলেন, ‘সেন্সর নিতে হলে কিন্তু পরিচালক বা প্রযোজককে এফডিসির নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) নিতে হয়। আমাদের প্রস্তাবনাটাও তেমন। পরিচালক বা প্রযোজক এনওসি নেবেন পরিচালক সমিতির কাছ থেকে।’

পরিচালক সমিতির আন্তর্জাতিক ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক এবং নির্মাতা নোমান রবিন। ছবি: সংগৃহীত

এফডিসির এনওসিতে সেন্সর চাওয়া পরিচালক বা প্রযোজকের এফডিসিতে টাকা বকেয়া থাকা না থাকর বিষয় উল্লেখ থাকে। পরিচালক সমিতির এনওসিতে কী লেখা থাকবে জানতে চাইলে রবিন বলেন, ‘পরিচালক সমিতি জানাবে সেন্সর চাওয়া পরিচালক সমিতির সদস্য কি না। সদস্য যদি না হয়, তারপরও তাকে সেন্সরে দিলে সমস্যা নাই বা সমস্যা আছে, এই বিষয়গুলোই এনওসির মাধ্যমে জানাবে সমিতি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেয়া পাঁচটি প্রস্তাবের মধ্যে আরেকটি হলো পরিচালক সিমিতির সভাপতি ও মহাসচিবকে সেন্সর বোর্ডের সদস্য করা। এই সদস্য হওয়ার মাধ্যমেই কিন্তু সমিতি সহজেই সেন্সর বোর্ডকে জানাতে পারবে পরিচালকদের ব্যাপারে।’

এটা করার কারণ উল্লেখ করে রবিন বলেন, ‘আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য পরিচালকদের এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা। আমরা যে সময় পার করছি, সেখানে বিভাজন দিয়ে হবে না। এখানে ঐক্য লাগবে। আর সেই ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য অন্য উপাদানগুলোর পাশাপাশি প্রেসারও দিতে হবে।’

প্রস্তাবনাটি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে সিনেমা সেন্সর বোর্ড থেকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার আগে পরিচালক সমিতিও সনদ দেয়ার ক্ষমতা পাবে। আর অনুমতি না পেলে এখনকার নিয়মেই চলবে সেন্সর ছাড়পত্র দেয়ার পদ্ধতি।

এ বিভাগের আরো খবর