ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্রের নামী পরিচালক, অভিনেতা, লেখক ও গীতিকার ঋতুপর্ণ ঘোষ। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৩ সালের এই দিনে মৃত্যু হয় তার। বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের চলে যাওয়ার আট বছর পূর্ণ হলো আজ।
কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্র ছিলেন ঋতুপর্ণ। বাবা সুনীল ঘোষ ছিলেন ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চিত্রশিল্পী।
সিনেমা পরিচালনার আগে ঋতুপর্ণ একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করেছিলেন।
তার পরিচালনায় প্রথম সিনেমা হিরের আংটি মুক্তি পায় ১৯৯২ সালে। ছোটদের জন্য সিনেমাটি তিনি নির্মাণ করেছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে।
১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র উনিশে এপ্রিল । এটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে ১৯৯৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পায়।
এরপর দহন মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। ১৯৯৮ সালে এই সিনেমা শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্য বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পায়। শুধু তাই নয়, এই সিনেমার দুই অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও ইন্দ্রানী হালদার একসঙ্গে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় ঋতুপর্ণ নির্মিত অসুখ চলচ্চিত্রটি। এটি শ্রেষ্ঠ বাংলা সিনেমা বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পায়।
২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তার উৎসব সিনেমাটি শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পায়।
দুই দশকের কর্মজীবনে তিনি ১২টি জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছিলেন।
ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতিমান পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ঋতুপর্ণের প্রাণে। তার অনেক সিনেমাতেও রয়েছে সেই ছাপ। চোখের বালি, নৌকাডুবি, চিত্রাঙ্গদা সিনেমাগুলোকে তার রবীন্দ্র উদযাপনই বলা যায়।
শুধু তাই নয়, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে জীবনস্মৃতি নামের একটি ডকুমেন্টারিও করেছিলেন এ পরিচালক।
ঋতুপর্ণ ঘোষই হলেন একমাত্র পরিচালক, যিনি সমগ্র বচ্চন পরিবারের সঙ্গে কাজ করেছেন।
‘দ্য লাস্ট লিয়ার’ চলচ্চিত্রের সেটে ঋতুপর্ণ ঘোষ ও অমিতাভ বচ্চন। ছবি: সংগৃহীত
তার মৃত্যুর পর অমিতাভ বচ্চন এক টুইটে লিখেছিলেন, ‘ঋতুপর্ণ ছিলেন এক সংবেদনশীল শিল্পমনস্ক নরম মনের মানুষ।’
ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র জগতের খ্যাতিমান পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘকাল পুরুষ শরীরে নারীর মন, নারীর কামনা-বাসনা বয়ে বেড়ানো ঋতুপর্ণকে কম কথা শুনতে হয়নি। জবাবে দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঋতুপর্ণ বলতেন, ‘শিল্পীর কোনো লিঙ্গ হয় না।’