কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল স্বীকার করেছেন যে, ‘মানসিক ও শারীরিক বিচ্যুতি অনেক সময় ফেসবুকসহ আমাদের মিথষ্ক্রিয়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব ফেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আমার অনেক পোস্ট এই বিচ্যুতির ফল।’
তিনি এও স্বীকার করেছেন যে, পরিবারের সমর্থনে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করছেন এবং পরবর্তীতে তার অনাকাঙ্খিত কর্মের জন্য যে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হলে তিনি তা মাথা পেতে নেবেন।
বুধবার (১৯ মে) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সঙ্গে কথা হয় নোবেলের। কথা বলার পর নোবেল এবং ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার নাজমুল ইসলাম আলাদা আলাদা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। নাজমুল ইসলাম নিউজবাংলার সঙ্গে কথাও বলেছেন।
নাজমুল ইসলাম তার স্ট্যাটাসে নোবেলের ভেরিফাইড ফেসবুক হ্যাকড হওয়াকে ‘কথিত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘জনাব নোবেলের সঙ্গে কথা বলেছি। তার সাম্প্রতিক মানসিক বা শারীরিক বিচ্যুতি ও কথিত ফেসবুক হ্যাক, পেজে অশোভনীয় পোস্ট নিয়ে সাইবার আইনের ভাষ্য, সাইবার ইথিক্স ও নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে তাকে sensitize (সংবেদনশীল) করা হয়েছে।
‘আশা করি তিনি তার অন্যায় বুঝতে পেরেছেন, তবে সংক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আইনি অধিকারকে সম্মান করি এবং তারা যে কোনো সময় কম্পিটেন্ট অথরিটির কাছে অভিযোগ করে আইনি প্রতিকার চাইতে পারে। এটা বলা প্রণিধানযোগ্য যে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।’
অন্যদিকে নোবেল তার ভেরিভাইড ফেসবুক পেজে জেমস, তাপস, গীতিকার-সুরকার ইথুন বাবু, সংগীত পরিচালক আহমেদ হুমায়ূন, সাংবাদিক আল কাছিরসহ সকল সাংবাদিক ভাইবোনদের কাছে ক্ষমা চেয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস লিখেছেন।
নোবেল লিখেছেন, ‘আমি মাঈনুল আহসান নোবেল! আমি আপনাদের নোবেল! আজ আমি নোবেল হতে পেরেছি আপনাদের ভালবাসা, সমর্থন ও দোয়ায়। দুই বাংলার অসংখ্য বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য গান গাইতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। আমি আমার দেশ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বাংলা গানের ভক্তদের জন্য মৌলিক গান নিয়ে ফিরে আসতে চাই আপনাদের মাঝে।
‘আমি বিশ্বাস করি আমার পোস্ট অনেককেই ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং সমষ্টিগতভাবে সম্মানিত নেটিজেনদের ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিখ্যাত লেজেন্ড শ্রদ্ধেয় জেমস ভাই, শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় তাপস ভাই, প্রিয় গীতিকার-সুরকার ইথুন বাবু ভাই, সুপ্রিয় সংগীত পরিচালক আহমেদ হুমায়ন ভাই, সময় টিভির সাংবাদিক আল কাছির ভাইসহ সকল সাংবাদিক ভাইবোনদের কাছে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে ক্ষমা চাই ও আমার পোস্টের মাধ্যম যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করি।
‘আমি এই মুহূর্তে আমার মানসিক ও শারীরিক বিচ্যুতি নিয়ে কনসার্নড। আমার পরিবারের সমর্থনে আমি চিকিৎসা গ্রহণ করছি ও আল্লাহর রহমতে শিগগিরই সুস্থ হয়ে নতুন গান নিয়ে ফিরে আসব।
‘আমি যেহেতু বাংলাদেশের সাইবার আইন ও পুলিশের সাইবার ইউনিটের কার্যক্রম বিষয়ে সচেতন, আমি সচেতনভাবে দেশের আইন বা নৈতিকতার বাইরে কিছু করতে চাই না বা আর করব না, তারপরও আমার অনাকাঙ্খিত কর্মের জন্য যে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হলে তা মাথা পেতে নেব। আমিও আশা করব আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে আপনাদের সেবা করার সুযোগ করে দিবেন।
‘ভাল থাকুক নোবেল, ভাল থাকুক বাংলাদেশের সাইবার স্পেস, ভাল থাকুক বাংলাদেশের সংস্কৃতি। ভাল থাকুন আপনারা সবাই। আল্লাহ সহায়!!’