আসন্ন রোজার ঈদ হবে লকডাউনের মধ্যে। ৩ মে এই ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত সবাই ভাবছিলেন ৫ মে-তেই শেষ হচ্ছে লকডাউন। সিনেমা ব্যবসায়ীরা ভেবেছিলেন লকডাউন শেষ হলে পরিস্থিতি বুঝে এবং সবার সঙ্গে আলোচনা করে প্রেক্ষাগৃহে ঈদের সিনেমা চালানোর সিদ্ধান্ত নেবেন।
কিন্তু ১৬ মে পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণায় নতুন সমীকরণ করতে বসেছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। এই সমীকরণে কোনো আশা দেখতে পারছেন না ঈদের মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমার প্রযোজকরা।
মিশন এক্সট্রিম মুক্তি পাবে কি না জানতে চাইলে সিনেমার অন্যতম পরিচালক ফয়সাল আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা প্রযোজক ভালো বলতে পারবেন। তবে আমি আর কোনো সম্ভাবনা দেখি না।’
শাকিব খান অভিনীত বিদ্রোহী সিনেমার প্রযোজক সেলিম খান বলেন, ‘এ অবস্থায় সিনেমা মুক্তি আর কীভাবে সম্ভব।’
যদি সিনেমা হল মালিকরা সিনেমা চায়, সেক্ষেত্রে কী করবেন, জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘বিদ্রোহী সিনেমা বেশি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিতে হবে। তা হলে এর ব্যবসা হবে। এই পরিস্থিতিতে কয়টা সিনেমা হলই আর খোলা থাকবে। এই কয়টা সিনেমা হল দিয়ে হবে না আসলে।’
অন্তরাত্মা সিনেমার দৃশ্যে শাকিব খান ও কলকাতার দর্শনা বণিক। ছবি: সংগৃহীত
শাকিব খানের আরেক সিনেমা অন্তরাত্মা। সিনেমার পরিচালক ওয়াজেল আলী সুমন নিউজবাংলাকে বলেছেন, ‘সিনেমাটি মুক্তির সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। তা ছাড়া সিনেমার পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। কাজ শেষ করতেও সময় লাগবে।’
সিয়াম আহমেদ, পূজা ও তাসকীন অভিনীত সিনেমা শান। সিনেমাটি ২০২০ সালেই মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সিনেমাটি নিয়ে এক বছর ধরে অপেক্ষা করে আছেন প্রযোজক আজাদ খান।
শান সিনেমার দৃশ্যে সিয়াম আহমেদ ও পূজা চেরী। ছবি: সংগৃহীত
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিনেমাটি মুক্তি দেব কি না তা চূড়ান্ত করব শুক্রবার। অনেকের সঙ্গেই কথা বলছি, আরও কথা বলতে হবে।’
অন্যদিকে প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ জানিয়েছেন, ঈদে সিনেমা হল খোলা রাখবেন কি না, তা নিয়ে প্রযোজক ও হল মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তারা।
তিনি বলেন, ‘প্রযোজক, হল মালিকদের পাশাপাশি তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।’
মিশন এক্সট্রিম সিনেমার দৃশ্যে আরিফিন শুভ ও ঐশী। ছবি: সংগৃহীত
প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের অক্টোবরে সিনেমা হল খুলে দেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪টির মতো সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু কোনো সিনেমাই ব্যবসা করতে পারেনি। ঈদের সিনেমাগুলো বড় বাজেটের। যদি এই সিনেমাগুলোও ব্যবসা করতে না পারে তখন কী হবে।’
বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি দিলেও যদি দর্শকরা সিনেমা হলে না আসেন, সবাই সেই আশঙ্কা বা আস্থাহীনতায় ভুগছেন।