দেশের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। নতুন এক ইতিহাস তৈরি করেছেন তিনি। ইউটিউবে ১ কোটিরও বেশিবার দেখা হয়েছে এমন নাটক অপূর্ব ঝুলিতে এখন ২০টি। এমন রেকর্ড দেশের অন্য কোনো নাট্যাভিনেতার নেই।
নাটক বিশটি হলো বড় ছেলে, অবুঝ দিনের গল্প, ব্যাচ ২৭; দ্য লাস্ট পেজ, ভালো থেকো তুমিও, দ্যা পারফেক্ট ম্যান, ভালোবাসি তুমি আমি, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস চাপাবাজ, বিনি সুতোর টান, এক্সচেঞ্জ, যদি তুমি জানতে, গোলাপী কামিজ, হঠাৎ দেখা, ফার্স্ট লাভ, প্রেমছবি, ক্যান্ডি ক্রাশ, শেষ পর্যন্ত, জীবন, শুধু তুমি, পার্টনার, তোমার অপেক্ষায়।
এমন অর্জনে উচ্ছ্বসিত অপূর্ব। দর্শক, পরিচালক, চিত্রনাট্যকারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছেন ধন্যবাদ।
এমন আনন্দের সময়ে অপূর্ব কথা বলেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে। সেখানে উঠে এসেছে তার নাটক, ভক্ত-দর্শক, পরিচালকদে কথা।
আপনার অভিনীত ২০টি নাটক এক কোটিরও বেশিবার দেখা হয়েছে। এই সাফল্যের পেছনে হয়তো ভালো গল্প-চিত্রনাট্য, নির্মাণের কথা বলবেন। কিন্তু অপূর্বর কারিশমাটা কি?
এটা একটা টিম ওয়ার্ক। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা লাগে। সেখানে আমার কাজ থাকে অভিনয়টা ঠিক করে করা। সেটা আমি করার চেষ্টা করি। কাজের চূড়ান্ত রায় দর্শকদের হাতে।
দর্শকরাতো নিশ্চিতভাবে সবচেয়ে বড় বিষয়। কিন্তু আপনি তাদের বোঝেন কীভাবে? তাদের চাওয়া বা প্রত্যাশা ছুঁয়ে যাওয়ার কোনো ছক কি আপনার জানা আছে?
একদমই না, কোনো ছক জানা নেই। আর আমি বা আমরা কোনো ছকেও কাজ করি না। সেটা হলে তো আমরা ছকে বন্দি হয়ে যাব। নানা রকমের কাজ করি আমি।
গল্পটাই এখানে মূল বিষয়। তারপরও শাশ্বত কিছু বিষয় থাকে, যা বার বার দেখতে ইচ্ছে করে, শুনতে ইচ্ছে করে।
যেমন, আগেকার সুপারম্যান দেখলেই বোঝা যায় যে এটা এই সময়ের না। কারণ তার গ্রাফিক্স এখনকার মতো উন্নত নয়। ওই সিনেমাগুলো আমাদের সেভাবে টানে না। কিন্তু যে সিনেমায় আবেগ আছে, অনুভূতি আছে, সেই সিনেমা বা তার সংলাপ শুনতে কিন্তু বিরক্ত লাগে না।
এই বিষয়টাই সবচেয়ে বেশি কাজ করে মনে হয়। দর্শক হিসেবে আমিও এমন। আগের ক্ল্যাসিক সিনেমাগুলো এখনও দেখি এবং দেখতে ভালো লাগে।
‘অপূর্ব’ মানেই হিট নাটক’- প্রযোজক বা পরিচালকদের অনেকেই এটা মনে করেন। এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসটা কি তাদের এবং আপনার এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়?
নিশ্চিতভাবে এটা একটা অন্তরায়। আমি থাকলেই নাটক হিট- এটা কোনো কথা না। এটা হয়তো দূর থেকে অনেকে মনে করেন। কিন্তু কাছে আসলে দেখা যায় আমাদের পরিশ্রমটা কেমন। পরিশ্রমটা মানসিক ও শারীরিক।
আর অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ। প্রযোজক-পরিচালকদের জন্য বিষয়টি যেমন খারাপ, আমার জন্যও তেমনি। ওভার কনফিডেন্ট হলে তখন আর ভালো কাজ করা হয় না বলে আমার ধারণা।
আপনি তো সুপারস্টার। সুপারস্টারের ক্ষেত্রে যেটা হয় যে, নবীন পরিচালকরা তার কাছে আসতে পারে না। কিন্তু আপনাকে নবীন পরিচালকদের কাজেই বেশি দেখা যায়।
আমি সবার কাজই করতে পারি, যদি গল্পটা ভালো হয়। সেখানে নতুন-পুরনো পরিচালক বিষয় না। অনেক গুণী নির্মাতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। নিশ্চয়ই আবার কাজ করব।
আপনি নাটকের সুপারস্টার। ড্রইংরুম, ইউটিউবে আপনার গ্রহণযোগ্যতা প্রচণ্ড। সেই হিসেবে আপনাকে অনেক বেশি ওয়েবে দেখার কথা ছিল। সেই তুলনায় দেখা যাচ্ছে না।
নাটকে এতবেশি ব্যস্ত থাকতে হয় যে ওয়েবের জন্য কাজের সময় দিতে পারছি না। তাছাড়া ওয়েবের জন্য বেশি দিন কাজ করতে হয়। সেই সময়টা নাটক সংশ্লিষ্টরা হয়তো অপেক্ষা করেন আমার জন্য। ওয়েবে কাজ না করার এটাও একটা কারণ।
করোনয় কীভাবে কাজ করছেন?
একমাস ধরে কাজ বন্ধ রেখেছি। আমার যে কাজগুলো এবারের ঈদে প্রচার হবে, সেগুলো আগের করা।
জীবনকে কীভাবে দেখছেন এখন?
জীবনে বেশি কিছু চাই না; জয়-পরাজয় নিয়ে ভাবি না। অনেক কিছু মাথায় নিয়ে চলি না। ভালো থাকার এটা একটা উপায় বলে আমার মনে হয়।