দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ দেশের নামকরা লোকসংগীতশিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া। অসুস্থতার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে তার সময়। আর্থিক সংকটে করাতে পারছেন না উপযুক্ত চিকিৎসা।
এই বৃত্তেই ঘুরছে এখন কাঙালিনীর জীবন। কখনও ভালো কখনও খারাপ।
সম্প্রতি কাঙালিনীকে দেখতে গিয়েছিলেন দেশের আরেক নামকরা লোকসংগীতশিল্পী কুদ্দুস বয়াতি।
এক সরু গলি পার হয়ে কাঙালিনীর বাসা। মেয়ে পুষ্প, মেয়ের জামাই আর কাঙালিনী একসঙ্গেই থাকেন।
‘বুড়া হইলাম তোর কারণে’ গানটি গাইতে গাইতে কাঙালিনীকে ক্যামেরার সমানে নিয়ে আসেন কুদ্দুস। গান থামতে কাঙালিনী বলেন, ‘এতদিন পর মনে পইল।’
কুদ্দুস জানান, সংগীত জীবনে তাদের সম্পর্ক ৪০ বছরের। নানা রকমের অভিনয় আর গানে তারা মঞ্চ মাতিয়েছেন। কুদ্দুস ও কাঙালিনী একসঙ্গে দেশের বাইরেও অনেক অনুষ্ঠান করেছেন।
এই দুই শিল্পীই এখন অসুস্থ। এতদিন পর মনে কাঙালিনীকে মনে পরার কারণ জানিয়ে কুদ্দুস বলেন, ‘আমি নিজেই তো অসুস্থ ছিলাম তির-চার বছর।’
আর কাঙালিনী বলেন, ‘আমি এখন অসুস্থ ওষুধের অভাবে। টাকা নাই, ওষুধ কিনতে পারি না।’
নিজ উদ্যোগেই কাঙালিনীকে দেখতে গিয়েছিলেন কুদ্দুস বয়াতি। বলেন, ‘আমার সাথিরা এখন কোথায় আছে, কেমন আছে, খোঁজ নেয়া দরকার। আমাদের তো কেউ তো খোঁজ নেয় না। সবাই গ্রাম-গঞ্জে পড়ে আছে।’
কুদ্দুস বয়াতি ও কাঙালিনী সুফিয়া। ছবি: সংগৃহীতস্মৃতির রোমন্থন করে কুদ্দুস বলেন, ‘যখন গান হইত, গান গাইতাম, তখন আমাদের যত্নের শেষ নেই। গান শেষ হয়ে গেলে কাউকে পাওয়া যায় না। বিদায় দেয়ার লোকই পাওয়া যায় না। খুব দুঃখের মধ্যে আছি।’
মায়ের অসুস্থতার বর্ণনা দিয়ে পুষ্প বলেন, ’১০-১২ দিন আগে মা বেশি অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। সেখানে বলে যে তোমরা তো ফ্রি চিকিৎসা করাতে চাও, তাহলে সরকারি হাসপাতালে যাও। কিন্তু সেখানেও তো টাকা লাগবে। সেখানে না হয় বেড ভারা ফ্রি করে দেবে। কিন্তু ওষুধ তো বাইরে থেকে কিনতে হবে।
‘সেই টাকা তো আমাদের কাছে নাই। পরে মাকে বাসায় নিয়ে আসছি। ধার করে ওষুধ কিনে দিসি। সেটাই খাওয়াইছি। সেই ওষুধও এখন শেষ হয়ে গেছে।’
এভাবেই নিজেদের বর্তমান অবস্থার কথা জানায় কুদ্দুস বয়াতি ও কাঙালিনী সুফিয়া।
কুদ্দুস যে কাঙালিনীকে দেখতে গিয়েছিলেন, তার একটি ভিডিও করেন কুদ্দুস। সেই ভিডিওতে এসব কথা বলেছেন সবাই। ভিডিওটি ২১ এপ্রিল পোস্ট করা হয়েছে কুদ্দুস বয়াতীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে।