বাংলা সিনেমার মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে ঢাকার চলচ্চিত্রাঙ্গনে। তার মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক, শ্রদ্ধা, স্মৃতিচারণা ও অনুভূতি প্রকাশ করেছেন তারকারা।
মৃত্যু চির সত্য, তবু সেই সত্য যেন মানতে কষ্ট হয় প্রিয়মুখ যখন চলে যায়। তেমনই কবরীর মৃত্যু যেন প্রবলভাবে স্মৃতিপটে নাড়া দিয়েছে একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সুজাতা আজিমকে। সেই অনুভূতিই তিনি প্রকাশ করেছেন ফেসবুকে।
নিজের ফেসবুকে কবরীর একটি ছবি পোস্ট করে সুজাতা লেখেন, ‘ভাবনার বাহিরে যা ঘটে আমরা তা মেনে নিতে পারি না! আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলো বুঝি এই ভাবেই ঝরে যায়! এই সব নক্ষত্রগুলো বিশাল আকাশে আর জ্বলবে না, কোনো কালেই না!’
স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে রূপবান খ্যাত এই অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘এক সাথে কাজ করেছি, পথ চলেছি। জীবনের কত গল্পই না আছে আমাদের। ভালো থেকো ওপারে। আমিন!’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কবরী শনিবার প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্টোলিভার হাসপাতালে মারা যান।
সারাহ বেগম কবরী ১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ষাট ও সত্তরের দশকের বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নায়িকা ছিলেন তিনি। ঢাকার চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ছিলেন রাজ্জাক-কবরী।
তার আসল নাম মিনা পাল৷ পিতা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল৷ ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে আবির্ভাব কবরীর। কবরী বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে। সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের সুতরাং দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় কবরীর। ১৯৬৫ সালে অভিনয় করেন জলছবি ও বাহানায়, ১৯৬৮ সালে সাত ভাই চম্পা, আবির্ভাব, বাঁশরি, যে আগুনে পুড়ি। ১৯৭০ সালে দীপ নেভে নাই, দর্পচূর্ণ, ক খ গ ঘ ঙ, বিনিময় ছবিগুলো।
১৯৭৫ সালে সুজন সখী সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছান। জনপ্রিয় ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে আগন্তুক, নীল আকাশের নিচে, ময়নামতি, সারেং বৌ, দেবদাস, হীরামন, চোরাবালি, পারুলের সংসার। ২০০৫ সালে আয়না নামের একটি ছবি নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন কবরী।