রমজান মাসে প্রতিবছর সারা দেশের সিনেমা হল বন্ধ থাকে। একমাস বন্ধ থাকার পর ঈদের সিনেমা মুক্তি পায় হলগুলোতে। এজন্য তৎপর হন প্রদর্শকরা। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি অন্যরকম। প্রদর্শকরা আশাবাদী হতে পারছেন না। সরকারের ঘোষণা করা এক হাজার কোটি টাকার তহবিলের দিকে তাকিয়ে আছেন হল মালিকরা।
প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বাংলানিউজকে বলেন, ‘করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন সিনেমা হলের কর্মীরা। হল বন্ধ থাকা ও সিনেমা তেমন মুক্তি না পাওয়ায় রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন হল মালিক ও কর্মীরা। করোনার কারণে ছাঁটাই করা হয়েছে প্রেক্ষাগৃহের অনেক কর্মীকে।’
করোনার কারণে দেশের বেশির ভাগ সিনেমা হল বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। ২০২০ সালে সাত মাস বন্ধ থাকার পর সিনেমা হল খোলে ১৬ অক্টোবর। তারপর পাঁচ মাসে সিনেমা মুক্তি পেয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি। এর মধ্যে কোনো সিনেমা একসঙ্গে ৬০টির বেশি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি।
এ বছর ‘খারাপ সময়’ কেটে যাবে বলে আশাবাদী ছিলেন প্রদর্শকরা। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় আঘাতে তা পড়েছে অনিশ্চয়তায়। আর্থিক সংকটসহ নানা কারণে প্রযোজকরা সিনেমা মুক্তি না দেয়ায় বেশি অসুবিধায় পড়েছেন হল মালিকরা। তারা হল চালু রাখতে আবেদন করেছেন ‘বলিউড সিনেমা’ আমদানির। ঊনপঞ্চাশ বাতাস, বিশ্ব সুন্দরীসহ কয়েকটি সিনেমার মাধ্যমে হলগুলোতে দর্শক ফিরলেও তা থমকে গেছে। ঈদে সিনেমা ব্যবসা ভালো হয় বলে সবার নজর ছিল সেদিকে। কিন্তু সেখানেও এখন অনিশ্চয়তা।
প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘১৫ রোজা পর্যন্ত দেখি কী হয়। প্রযোজকরা সিনেমা দিলে নিয়মিত হল আর মৌসুমি হলসহ ২০০টি এর মতো হল চালু করতে পারব।’
প্রযোজক পরিবেশক সমিতি জানায়, ঈদে বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি পাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ঈদে মুক্তির জন্য অনেক আগে থেকেই শাকিব খানের বিদ্রোহী ও ডিপজলের একটি সিনেমা আবেদন করে রেখেছে। লকডাউন উঠে গেলে বা ঈদে বড় বাজেটের সিনেমা দেখানোর সুযোগ থাকলেও দর্শকরা সিনেমা হলে আসবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ‘সব মিলিয়ে খুবই ক্ষতির মধ্যে আছেন হল মালিকরা। বড় বাজেটের সিনেমার পাশাপাশি দর্শক প্রেক্ষাগৃহে না আসলে বন্ধ হতে থাকবে সিনেমা হল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা হলের পরিবেশ ফেরাতে কিছু উন্নয়ন কাজ জরুরি। সমস্যায় জর্জরিত দেশের সিনেমা হল মালিকরা সরকারের ঘোষণা করা তহবিল থেকে দীর্ঘমেয়াদী লোন নিতে আগ্রহী। আমরা আমাদের সমিতির সদস্যদের আবেদন সংগ্রহ করছি। ৮০ জনের মতো হল মালিক এ বিষয়ে কথা বলেছেন।’