একুশে পদকপ্রাপ্ত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক মারা গেছেন। রাজধানীর একটি হাসপাতালে কিডনি সমস্যা এবং করোনা-পরবর্তী জটিলতা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোর ৬টায় তার মৃত্যু হয়।
নিউজবাংলাকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন মিতা হকের ভাগ্নি অভিনয়শিল্পী রুনা খান।
তিনি জানান, মিতা হকের কিডনি সমস্যা প্রায় পাঁচ বছর। তার নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হতো।
রুনা খান আরও বলেন, ‘মিতা হক করোনা পজিটিভ হয়েছিলেন এবং করোনা নেগেটিভ হয়ে হাসপাতাল থেকে শুক্রবার বাড়ি ফিরেছিলেন। এরপর আবার কিডনি এবং করোনা-পরবর্তী সমস্যার কারণে শনিবার তাকে ভর্তি করা হয় রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে।
‘সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। রোববার ভোরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’
রুনা খান বলেন, ‘চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে মিতা স্ট্রোক করেছিলেন।’
শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বেলা ১১টায় মিতা হকের মরদেহ ছায়ানট ভবনে নেয়া হবে। সেখান থেকে নেয়া হবে কেরানীগঞ্জ। বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হককে।
মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালে। সংগীত শিক্ষা শুরু চাচা ওয়াহিদুল হকের কাছে। পরে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খান ও সনজীদা খাতুনের কাছে গান শেখেন। ১৯৭৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে সংগীত পরিবেশনা শুরু করেন তিনি।
মিতা হকের এককভাবে মুক্তি পাওয়া অ্যালবামের সংখ্যা ২৪টি। এর মধ্যে ১৪টি ভারত থেকে ও ১০টি বাংলাদেশ থেকে। সুরতীর্থ নামে একটি সংগীত প্রশিক্ষণ দল পরিচালনা করতেন তিনি। এ ছাড়া তিনি ছায়ানটের রবীন্দ্রসংগীত বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক লাভ করেন মিতা হক। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২০ সালে একুশে পদক প্রদান করে।
মিতা হকের স্বামী অভিনেতা-পরিচালক খালেদ খান ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। এই দম্পতির একমাত্র কন্যাসন্তান ফারহিন খান জয়িতা।
শোক
মিতা হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মিতা হকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শোকবার্তায় তিনি জানান, মিতা হক তার গানের মধ্য দিয়ে এ দেশের রবীন্দ্রসংগীতপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।