করোনার প্রকোপ এতই বেড়েছে যে, সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন দিয়েছে সরকার। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেতনতাই একমাত্র উপায়, যা করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখতে পারে সবাইকে।
আর এই সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্নজন নানা রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের মধ্যে ‘পাশে আছি ইনিশিয়েটিভ’ একটি গ্রুপ; যারা রিকশার পেছনে পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করতে চেয়েছে।
পদক্ষেপটি আলাদা করে নজর কাড়ে সবার। এই কর্মকাণ্ডে দেশের জনপ্রিয় সব চরিত্রগুলোর মুখে মাস্ক পরিয়ে তাদের জনপ্রিয় সংলাপ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে রিকশা পেইন্টিং। এর মাধ্যমে মাস্ক পরতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
রিকশা পেইন্টে ব্যবহার করা হয়েছে সালমান শাহ, বাকের ভাই, আলী যাকের, চঞ্চল চৌধুরী, ডিপজল, জাহিদ হাসানসহ আরও অনেকের মুখে মাস্ক পরা ছবি এবং এর সঙ্গে ব্যাবহার করা হয়েছে তাদের জনপ্রিয় সংলাপ।
বড় চাচা, সিকান্দার বক্স, আনিসের সঙ্গে আছেন ফেলুদা। ছবি: সংগৃহীত
সালমান শাহর মুখে মাস্ক পরা ছবির পাশে লেখা হয়েছে, ‘ও আমার বন্ধু গো, মাস্ক কোথায় তোমার।’
বাকের ভাইসহ বদি ও মজ্নু মাস্ক পরা ছবির পাশে লেখা হয়েছে, ‘বদি ঐ ছেলেটি মাস্ক পরেনি। ওকে একটি মাস্ক দিয়ে আসো।’
আয়নাবাজি সিনেমায় চঞ্চলের ছবির পাশে লেখা হয়েছে, ‘মাস্ক না পরলে করোনার ভেলকি লাগবে। বোঝো নাই ব্যাপারটা।’
এমন ছবি দেখে চঞ্চল বেশ উচ্ছ্বসিত। তিনি তার ফেসবুকে ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘হয়তো কোনো একজন রিক্সা পেইন্টার, মানুষের মধ্যে করোনা সচেতনতা বাড়ানোর জন্য, আয়নাবাজির আয়নার ছবি এঁকে, জনপ্রিয় এই ডায়লগটা ব্যবহার করেছেন।
‘তার এই সামাজিক দ্বায়িত্বশীল আচরণকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। বাকি দ্বায়িত্বটা আমাদের। আসুন আমরা সবাই করোনা সচেতন হই। এই মহামারী থেকে বাঁচার পথ একটাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। নিজে সুরক্ষিত থাকুন, পাশের মানুষটিকে সুরক্ষিত রাখুন।’
জনপ্রিয় চরিত্র বাকের ভাই ও তার দুই সাগরেদের মুখেও মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত
খোঁজ নিয়ে জানা গেল এই পেইন্টিংগুলো করেছেন হানিফ পাপ্পু নামের একজন আর্টিস্ট। তিনি মূলত সিনেমার পোস্টার পেইন্টিং ও রিকশা পেইন্ট করেন। তাকে দিয়ে কাজটি করিয়েছে পাশে আছি ইনিশিয়েটিভ গ্রুপ।
গ্রুপের সদস্য তাহমিদ হাসান বলেন, ‘আমরা গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই কাজ শুরু করি এবং জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই পেইন্টিংয়ের কাজ করিয়েছি। ঢাকার ভেতরে বিভিন্ন জায়গার রিক্সার পেছনে ছবিগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।’
ডিপজলের মুখে মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত
তিনি আরও বলেন, ‘এই ছবিগুলো এখনও রিকশার পেছনে আছে। আমরা মাঝে মাঝেই খবর নেই। জনপ্রিয় চরিত্র ও সংলাপের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিই ছিল এই কাজের মূল লক্ষ্য।’
সোমবার থেকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউনে এই কাজটি নতুন করে সবাইকে সচেতন করে তুলবে এটাই প্রত্যাশা আয়োজকদের।