জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব ও তরুণ বয়সের সময় নিয়ে টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই সিনেমা নির্মাণ করেছেন সেলিম খান। সিনেমার প্রযোজকও তিনি।
সেলিম খানকে অন্যভাবেও চেনেন অনেকে। তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যান। রাজনীতিক হিসেবেই কাজ করছিলেন। হঠাৎ করেই শাপলা মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে চলচ্চিত্র প্রযোজনায় আসেন ২০১৮ সালে। আর ২০২১ সালেই তিনি হয়ে যান চলচ্চিত্র পরিচালক।
তার পরিচালিত প্রথম সিনেমা টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিল্পকলার জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনী। সিনেমাটি মুক্তি পাবে ২ এপ্রিল।
আয়োজনে আমন্ত্রিত ছিলেন দেশের গুণী নির্মাতারা। সিনেমাটি দেখে তাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, তারা সিনেমাটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
সিনেমার দৃশ্যে তরুণ বয়সী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছবি: নিউজবাংলা
মন্তব্য করলে সমস্যা হবে বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিচালক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন পরিচালক জানান, সিনেমায় ইতিহাস বিকৃত হয়নি এটা ঠিক। কিন্তু সেটা ছাড়া আর কিছুই হয়নি।
সিনেমার দৃশ্যে বিয়ের দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ফজিলাতুন্নেছা। ছবি: নিউজবাংলা
সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর তরুণ বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন টুঙ্গিপাড়ার মিয়া ভাই সিনেমার প্রযোজক ও পরিচালক সেলিম খানের ছেলে শান্ত খান। তার বাজে অভিনয়ের কথা সংবাদমাধ্যমকে কেউ না বললেও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে শোনা গেছে প্রিমিয়ার শেষে।
বঙ্গবন্ধুর মতো স্পর্শকাতর চরিত্রে একজন আনকোড়া অভিনেতাকে কেন নেয়া হলো, জানতে চাইলে প্রযোজক-পরিচালক সেলিম খান বলেন, ‘চরিত্রটির বয়স দেখতে হবে। অভিনয় জানা বা না জানার বিষয় না এখানে। আমরা বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও তরুণ বয়সটা তুলে ধরতে চেয়েছি। এমন চরিত্রে যেমন অভিনেতা প্রয়োজন তেমন অভিনেতাই নেয়া হয়েছে।’
সিনেমার দৃশ্যে শিশু বয়সের শেখ মুজিবুর রহমান। ছবি: নিউজবাংলা
নিজের প্রথম সিনেমাতেই বঙ্গবন্ধুর মতো চরিত্র নিয়ে সিনেমা নির্মাণটা বেশি সাহসের কি না জানতে চাইলে সেলিম খান বলেন, ‘এটা নিয়ে একটা টিম ছয় মাস ধরে কাজ করেছে। তারপর আমি পরিচালনা করেছি।’
সিনেমায় ১৯৩০ থেকে ১৯৫২ সালের মধ্যে গোপালগঞ্জ, মধুমতী নদী, কলকাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
সিনেমাটি দেখে নারী দর্শক সারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চরিত্রের অভিনয়শিল্পীর অভিনয়ে বা কথায় কোনো উদ্দম নেই, গর্জে ওঠার সেই ভাবটা একদমই পাইনি। আবার বঙ্গবন্ধুর যে আত্মত্যাগ সেটাও মর্মস্পর্শী হয়নি। একটা ধারা বর্ণনার মতো মনে হয়ছে।
সিনেমার দৃশ্যে সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছবি: নিউজবাংলা
‘আর সংলাপগুলো বলার মধ্যে যে থেমে থেমে বলার প্রবণতা বা শুদ্ধ উচ্চারণ, এগুলো পরিস্থিতর সঙ্গে একদমই মানায়নি। তাই এটা বিরক্ত লেগেছে।’
সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও তরুণ বয়স দেখানোর কথা বললেও সিনেমার চিত্রনাট্যকার শামীম আহমেদ রনি ঘটনা টেনে নিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধুর ৪৫ বা এর কাছাকাছি বয়সে।
কারণ সিনেমার শেষে একটি ছোট ছেলেকে তার চেয়ে বয়সে বড় একটি মেয়েকে বলতে শোনা যায়, ‘হাসিনা বুবু তোমার আব্বাকে কি আমি আব্বা বলে ডাকতে পারি?’