‘অমরত্বের প্রত্যাশা নেই, নেই কোনো দাবিদাওয়া
এই নশ্বর জীবনের মানে শুধু তোমাকেই চাওয়া’
অমরত্বের প্রত্যাশা না করেও যিনি অমরত্বের পথিক, তিনি কবির সুমন। যে নামে প্রেম-বিদ্রোহ, আনন্দ-বেদনা এক সুতায় গাঁথা।
১৯৭২ সালে ২৩ বছর বয়সে তিনি তার জীবনের প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড করেন। জীবনের ৭৩তম জন্মদিনে আজও গানে গানে বলে যান একই কথা।
১৬ মার্চ, মঙ্গলবার এই কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর ৭৩তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে তার প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ডের স্মৃতিবিজড়িত কথা জানিয়েছেন ফেসবুক পোস্টে।
এক স্ট্যাটাসে কবির সুমন লিখছেন, ‘১৯৭২ সালে হিন্দুস্তান সংস্থা, পরে যা ইনরেকো নামে পরিচিত, প্রকাশ করে আমার প্রথম গ্রামোফোন ডিস্ক। রবীন্দ্রনাথের গানের। দুটি গান- হেলাফেলা সারা বেলা (ফার্স্ট বেসিক রেকর্ডিং) আর ফিরবে না তা জানি। ট্রেনার ছিলেন সুবিনয় রায়। ৪৫ আরপিএম, স্ট্যান্ডার্ড প্লে। বাঁশি-চানুবাবু, গিটার-সমীর খাসনবিশ। বেহালা আর তবলা/খোলে কারা ছিলেন ভুলে গিয়েছি। মার্জনা চাইছি। রেকর্ডিং প্রকৌশলী-নীরদবাবু।
‘৪৭ বছর পর আবার অক্রুর দত্ত লেনের সেই স্টুডিওয় গেলাম আমার ছাত্রী রাকার লেখা সুরে দুটি আধুনিক গান রেকর্ড করতে। সেই গ্রামোফোন রেকর্ড বা তার পরের যুগের ক্যাসেট সিডি আর নেই। এই দুটি গান ইন্টারনেটে প্রকাশ পাচ্ছে।
‘একটু আগে রাকা আমায় জানালেন ইনরেকো আমার গাওয়া হেলাফেলা সারা বেলা আবার প্রকাশ করেছে আজ। আমায় লিংকও পাঠালেন রাকা। সেটিই কপি পেস্ট করলাম এখানে।
‘তখন আমার বয়স ছিল ২৩। আজ ৭৩।’
কবির সুমনের জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৬ মার্চ ভারতের উড়িষ্যায়। তার বাবা সুধীন্দ্রনাথ ও মা উমা চট্টোপাধ্যায়। তাদের দেয়া নাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। তবে পরে বদলে করেন কবির সুমন।
অভিনেতা, বেতার সাংবাদিক, গদ্যকার, রাজনীতিক সব পরিচয় ছাপিয়ে কবির সুমন একজন সুরকার, গীতিকার, সংগীতশিল্পী ও কণ্ঠযোদ্ধা। গানে গানে এই কণ্ঠ আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিদ্রোহ আর মুক্তির কথা বলে।
যার প্রতিবাদী গান কাঁটাতার পেরিয়ে শামিল হয় প্রতিরোধ, প্রতিবাদ আর দাবি আদায়ের মিছিলে।
বাংলাদেশের প্রতি কবির সুমনের প্রাণের প্রবল টান রয়েছে, সে কথা তিনি জানিয়েছেন বহুবার। সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার বিচার, শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ, ব্লগার রাজীব হত্যার বিচারসহ বহু প্রসঙ্গ নিয়েই গান করেছেন জীবনমুখী এই শিল্পী।