বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নারী পরিচালকদের ভিন্ন দৃষ্টি

  •    
  • ৮ মার্চ, ২০২১ ১১:০৮

ভারতীয় নারী পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম হলেন মিরা নায়ের। তিনি পরিচিত তার ডকুমেন্টারি ও আলোচিত সামাজিক বিষয়ের ওপর নির্মিত সিনেমাগুলোর জন্য। আর ফ্রান্সের নারীবাদী পরিচালক সেলিন সিয়াম্মার সিনেমায় উঠে আসে নারীদের লিঙ্গ ও যৌন পরিচয়ের বিভিন্ন দিক।

বিশ্ব নারী দিবসের এ বছরের থিম হলো চ্যালেঞ্জকে বেছে নেয়া। বিশ্বের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেই পরিবর্তন আসবে এ চিন্তাকে তুলে ধরতেই এমন স্লোগানে উদযাপন হচ্ছে নারী দিবস।

পরিবর্তনের এ নতুন ধারাকে উদযাপন করতে সিনেমা জগতে পরিবর্তন নিয়ে আসা নারী পরিচালকদের নিয়ে আজকের এ প্রতিবেদন।

চায়না থেকে পরিচালক ক্লোয়ি জাও, যিনি সম্প্রতি তার সিনেমা নোম্যাডল্যান্ডের জন্য জিতেছেন গোল্ডেন গ্লোবের সেরা পরিচালকের পুরস্কার। ভারতের পরিচালক মিরা নায়ের, যার সর্বশেষ কাজ ছিল নেটফ্লিক্স সিরিজ অ্যা সুটেবল বয়। ফ্রান্সের সেলিন সিয়াম্মা সিনেমা নির্মাণ করেন একজন নারীবাদীর চোখ দিয়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের সোফিয়া কোপোলা প্রথম আমেরিকান নারী হিসেবে জিতে নেন গোল্ডেন লায়ন পুরস্কার। আর জার্মানির মার্গারেথ ভন ট্রোট্টাকে বলা হয় জার্মানির নিউ জার্মান সিনেমা মুভমেন্ট নেতৃত্বকারী পরিচালক।

ক্লোয়ি জাও

৩৮ বছর বয়সী চাইনিজ পরিচালক ক্লোয়ি জাও ২০২১ সালের গোল্ডেন গ্লোবের আসরে নোম্যাডল্যান্ড (২০২০) সিনেমা দিয়ে জিতে নিয়েছেন সেরা পরিচালক মোশন পিকচারের পুরস্কার। মহা মন্দায় সর্বস্ব হারিয়ে ফেলা এক নারীর গল্প বলে নোম্যাডল্যান্ড।

ক্লোয়ির প্রথম সিনেমা সংগস মাই ব্রাদার টোট মি (২০১৫) প্রথম প্রদর্শিত হয় সানডান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। সিনেমাটি তাকে এনে দেয় আমেরিকান ইন্ডি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সেরা পরিচালকের পুরস্কার।

নাগরিকত্ব চাইনিজ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিপেনডেন্ট সিনেমা দিয়েই তাকে পরিচয় দেয়া হয়। তার অন্য সিনেমাগুলোর মধ্যে আছে দ্য রাইডার (২০১৭) ও দ্য ইটারনালস (২০২১)।

মিরা নায়ের

ভারতীয় নারী পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম হলেন মিরা নায়ের। তিনি পরিচিত তার ডকুমেন্টারি ও আলোচিত সামাজিক বিষয়ের ওপর নির্মিত সিনেমাগুলোর জন্য।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সাবেক ছাত্রী আগ্রহী হন ডকুমেন্টারি নির্মাণে। তার প্রথম ডকুমেন্টারির নাম জামে মসজিদ স্ট্রিট জার্নাল (১৯৭৯)। এতে মুসলমানদের জীবন চিত্র তুলে ধরেন তিনি।

চিলড্রেন অফ অ্যা ডিজাইয়ার্ড সেক্স (১৯৮৭) ডকুমেন্টারিতে তিনি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী শিশুদের জন্মকে কীভাবে দেখা হয় তা দেখিয়েছেন।

১৯৮৮ সালে তিনি নির্মাণ করেন তার প্রথম সিনেমা সালাম বোম্বে। এ সিনেমায় তিনি ১১ বছরের এক শিশুর জীবন দেখিয়েছেন, যে রাস্তায় বাস করে। তার মাধ্যমে মুম্বাইয়ের শহর জীবন তুলে ধরেছেন।

মিরা নায়েরের উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর হচ্ছে মিসিসিপি মাসালা (১৯৯১), দ্য নেমসেক (২০০৬), কুইন অফ কাতোয়ে (২০১৬) ও নেটফ্লিক্স সিরিজ অ্যা সুটেবল বয় (২০২০)।

সেলিন সিয়াম্মা

ফ্রান্সের নারীবাদী পরিচালক সেলিন সিয়াম্মার সিনেমা বলার ধরন নারীকেন্দ্রীক। চিরায়িত মেইল গেইজ বা সিনেমায় পুরুষের চাহিদা অনুযায়ী নারীদের যেভাবে দেখানো হয়, তার থেকে বেরিয়ে এসে তিনি সিনেমা নির্মাণ করেন। সেলিন সিয়াম্মার সিনেমায় উঠে আসে নারীদের লিঙ্গ ও যৌন পরিচয়ের বিভিন্ন দিক।

সিয়াম্মার প্রথম সিনেমা ওয়াটার লিলিস প্রদর্শিত হয় ২০০৭ সালে কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আসরে।

২০০৯ সালে তৈরি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রপলিন ফ্রান্সের সরকারি সমকামীভীতির বিরুদ্ধে তৈরি ক্যাম্পেইনের অংশ।

২০১১ সালে তিনি মাত্র ২০ দিনে টমবয় সিনেমা নির্মাণ করেন, যা ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে শিক্ষার অংশ হিসেবে দেখানো হয়। এ সিনেমার গল্প একজন ট্রান্সজেন্ডার শিশুকে ঘিরে, যাকে ছেলে হিসেবে সমাজে পরিচয় দেয়া হয়। কিন্তু নিজের আসল পরিচয় নিয়ে সে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে।

সিয়াম্মার আরও একটি অন্যতম চলচ্চিত্র হলো পোট্রেট অফ অ্যা লেডি অন ফায়ার (২০১৯)। সিনেমাটি ২০১৯ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শন হয় এবং কুয়ের পাম ও বেস্ট স্ক্রিনপ্লে বিভাগে পুরস্কার জিতে নেয়।

সোফিয়া কোপোলা

যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালক সোফিয়া কোপোলার সিনেমায় যাত্রা তার বাবার ফ্রান্সিস ফোর্ড কোপোলার হাত ধরেই হয়। সোফিয়া প্রথম সিনেমায় আসেন অভিনেত্রী হিসেবে। বাবার পরিচালিত বিখ্যাত ‘গডফাদার ট্রিলজি’তে তাকে প্রথম দেখা যায়। অভিনেত্রী হিসেবে প্রশংসিত হলেও পরিচালনায় মন দেন তিনি।

সোফিয়ার প্রথম পরিচালিত সিনেমা (১৯৯৯) দ্য ভার্জিন সুইসাইডস। ২০০৩ সালের লস্ট ইন ট্রান্সলেশন তাকে এনে দেয় সেরা অরিজিনাল স্ক্রিন প্লে বিভাগে অস্কার পুরস্কার। একই সিনেমার জন্য তিনি অস্কারের সেরা পরিচালক বিভাগে তৃতীয় নারী পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন।

২০১০ সামওয়ের সিনেমা তাকে এনে দেয় গোল্ডেন লায়ন পুরস্কার। একজন প্রথম আমেরিকান নারী ও চতুর্থ আমেরিকান হিসেবে তিনি এ পুরস্কার জিতে নেন।

২০১৭ সালে তিনি কান চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় নারী পরিচালক, যিনি সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতে নেন দ্য বেগুইল্ড সিনেমার জন্য।

মার্গারেথ ভন ট্রোট্টা

ইনগমার বার্গম্যানের ষাট ও সত্তরের দশকের সিনেমাগুলোর সঙ্গে যে পরিচালকের সিনেমার তুলনা করা হয়, তিনি জার্মানের মার্গারেথ ভন ট্রোট্টা। নিউ জার্মান সিনেমা মুভমেন্টের নেতৃত্বকারী হিসেবেও পরিচয় দেয়া হয় ট্রোট্টাকে।

নারীবাদী এ পরিচালকের সিনেমাগুলোর প্রধান বিষয় হলো নারী ও নারীকেন্দ্রীক সম্পর্ক। যেমন মা, বোন, বান্ধবীদের গল্প। এসব গল্প আবর্তিত হতো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে।

ট্রোট্টার প্রথম পরিচালিত সিনেমা হলো ১৯৭৮ সালের দ্য সেকেন্ড অ্যাওয়েকনিং অফ ক্রিস্টা ক্লাগেস। এর আগে তিনি পরিচালক ভলকার শ্লনড্রফের সঙ্গে মিলে সিনেমা নির্মাণ করেছেন।

তার সিনেমায় নারী কেন্দ্রিক বিভিন্ন বিষয় যেমন- গর্ভপাত, গর্ভনিরোধ, কর্মক্ষেত্রে নারীর অবস্থা, নারী নির্যাতন ইত্যাদি উঠে এসেছে স্পষ্টভাবে। তিনি মোট ২৬টি সিনেমা পরিচালনা করেছেন। পরিচালনার পাশাপাশি তিনি একজন অভিনেত্রীও।

সিস্টার্স, অর দ্য ব্যালেন্স অফ হ্যাপিনেস, ম্যারিয়ান অ্যান্ড জুলিয়ান, থ্রি সিস্টার্স তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা। ২০১৮ সালে তিনি নির্মাণ করেন ডকুমেন্টারি সার্চিং ফর ইনগমার বার্গম্যান।

এ বিভাগের আরো খবর