বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যুর পর উড়ে গেল তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ময়না পাখিটি।
৩০ বছর ধরে খাঁচায় পাখি পুষতেন তিনি। পছন্দ হিসেবে ছিল ময়না। প্রিয় মানুষটির প্রিয় পাখিটিকেও বিদায় জানাল পরিবার।
কয়েক বছর ধরে ভীষণ অসুস্থ থাকা মানুষটির মৃত্যুর গুজব বারবার ছড়িয়েছে সামাজিকমাধ্যমে। তবে এবার সত্যি সত্যি তিনি সব মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন।
এটিএম শামসুজ্জামান ভীষণ ভালোবাসতেন প্রিয় ময়নাটিকে। মানুষটি নেই, তিন দশকের ময়নার মায়া আর ধরে রাখার কোনো কারণ দেখছেন না স্বজনরা।
ছোট ভাই রতন বললেন, ‘পাখি পোষার শখ ছিল ভাইয়ের। ৩০ বছর ধরে পাখি পুষতেন তিনি।’
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পোষার জন্য ময়না পাখিই পছন্দ ছিল তার। ময়না ছাড়া অন্য পাখি পুষতে দেখিনি তাকে। প্রায়ই দেখেছি তিনি ময়না পাখিকে কথা বলা শেখাচ্ছেন আর খাবার খাওয়ানো তো নিয়মিত দৃশ্য ছিল।’
‘এটিএম শামসুজ্জামান নেই, পাখি রেখে আর কী হবে’- বললেন রতন।
বেলা পৌনে ১২টার দিকে খাঁচাটির দরজা খুলে দিতেই উড়ে যায় তার সেই ময়না। সেও কোনো মায়া করেনি। একা একটা খাঁচা শুধু পড়েছিল মূল দরজার কাছে। সেটির হয়ত খবর থাকবে না কিছুদিন পর।
তবে এটিএম শামসুজ্জামান মানুষের মনে যত্নে টিকে থাকবেন তার অভিনয়ের মাধ্যমে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুরান ঢাকার নিজ বাসভবনে তার মৃত্যু হয়। কিংবদন্তি এই অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন এটিএম শামসুজ্জামান। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত বুধবার তিনি হাসপাতালে যান। শুক্রবার বিকেলে সেখান থেকে সূত্রাপুরের বাসায় ফেরেন।
তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘এটিএম শামসুজ্জামানের মৃত্যু দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে তার অবদান মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।’
বর্ণাঢ্য অভিনয়জীবন স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অসাধারণ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন তিনি।’
অসাধারণ অভিনয়ের জন্য ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান। ২০১৫ সালে ভূষিত হন একুশে পদকসহ নানা সম্মাননায়।