কিছুদিন আগে খবর আসে শর্মিলা ঠাকুর শারীরিকভাবে সুস্থ অনুভব করছেন না। আসলেই কি তিনি অসুস্থ? আর তা না হলে কীভাবে কাটছে তার দিন?
বিষয়টি জানতে বলিউড হাঙ্গামা সম্প্রতি কথা বলেছে সত্যজিৎ রায়ের নায়িকা শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমি ভালো আছি। চিন্তার কোনো কারণ নেই। বয়স ৭৬ হলেও বই পড়ায়, বাগান করায়, সামাজিক এবং পারিবারিক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখি।’
লকডাউনের সময়টায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ কিংবদন্তি অভিনেত্রী সময় কাটিয়েছেন নিজের সিনেমা দেখে।
‘আমার অনেক সিনেমা আগে দেখা ছিল না। আমাকে বলতেই হবে আমার কিছু পুরনো সিনেমা যেমন ছোটি বাহু ও বাদনাম ফারিশতে সে সময়ের চেয়ে এগিয়ে।
‘অসিত সেনের সফর ও ভিমসেনের দুরিয়া আমার ভালো লেগেছে। কারণ এ দুটি সিনেমায় আমি একদম পেশাদার অভিনয় করেছি। এ চরিত্র দুটি সে সময়ের নায়িকাদের যে গৎবাঁধা চরিত্র দেয়া হতো, তার চেয়ে আলাদা ছিল।
‘আমার আরও ভালো লেগেছে অনুপমা, সফর, অমর প্রেম, তালাশ, আরাধনা। অপুর সংসার আমার জন্য একটা মাইলফলক ছিল। দেবীও তাই। দুটি সিনেমাই সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে।’
সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল সেমিনারে অংশ নেন শর্মিলা ঠাকুর।
শর্মিলা ঠাকুরের নিজের পছন্দ দেবী সিনেমা। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি এ সিনেমায় অভিনয় করেন।
দেবী সিনেমায় শর্মিলা ঠাকুর
‘এটা আমার সবচেয়ে পছন্দের সিনেমা এবং পারফরম্যান্স। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আমার জীবন বদলে গিয়েছে। অভিনয়ই আমার জন্য সব কিছু ছিল তখন। কিন্তু প্রতিটা সিনেমার পর আমি নিজেকে বলতাম, অভিনয় ছেড়ে দেব।
‘আমার প্রথম হিন্দি সিনেমা কাশ্মির কি কালি-তে নিজেকে একদম ভালো লাগেনি। নিজেকে বলেছি, আর একটা সিনেমা, তারপর আর না। কিন্তু এটা অবিরত চলেছে।
‘অনেক সিনেমা বাদও দিয়েছি। যেমন খিলোনা, তেরে মেরে সাপনে, রোটি কাপড়া অউর মাকান, আদমি অউর ইনসান। অভিনয়ই আমার জীবনে সব কিছু ছিল না, এ সত্যের তারিফ করা উচিত। জীবনে আরও অনেক কিছু করার আছে।
‘জয়া বা শাবানার মতো অভিনেত্রী যারা অ্যাক্টিং স্কুলে গিয়েছে, তাদের তুলোনায় আমি হঠাৎ বনে যাওয়া অভিনেত্রী ছিলাম। আমার মনে আছে, জয়াকে ১৩ বছর বয়সে ওর বাবা বিশিষ্ট সাংবাদিক তরুণ কুমার ভাদুরির সঙ্গে দেখছিলাম।
‘সেই বয়সেও তিনি সেজেগুজে থাকতেন, মাথায় ফুল পরতেন। ক্যামেরার প্রতি তার মুগ্ধতা কাজ করত। তার ভাগ্যেই অভিনেত্রী হওয়া লেখা ছিল। আমার এমন কোনো আকাঙ্ক্ষা ছিল না। সত্যি বলতে আমার ইচ্ছা ছিল শান্তিনিকেতনে পড়ার। আমি একজন নৃত্যশিল্পী হতে চেয়েছিলাম।’