‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন’ স্লোগানে শনিবার বিকেলে শুরু হয়েছে ১৪তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে রাজধানীর কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে উৎসবটির উদ্বোধন হয়। উৎসব চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
সাতদিন ব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আরও ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, উৎসব ও চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটির পতাকা উত্তোলন করেন অতিথিরা। শান্তির প্রতীক পায়রা ওড়ান তারা।
এরপর পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ বলেন, ‘শিশুদের মনন ও মানসিকতার জন্য এটা দারুণ এক আয়োজন। আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না যে, আমার ক্ষুদে বন্ধুরা এত বড় একটি আয়োজন করেছে। এই আয়োজন নিশ্চয়ই সফল হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সব উপজেলায় সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এর নকশাও প্রস্তুত হয়ে গেছে। সেখানে আগামীর নির্মাতাদের সিনেমা দেখানোর সুযোগ থাকবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এখানে আসার পর আমি আরও আশাবাদী হয়েছি। আমার মনে হয়েছে, আমাদের আগামী প্রজন্ম অনেক ভালো কিছু করবে। চলচ্চিত্র নির্মাণের মতো কঠিন একটি কাজ তারা এই বয়সেই করছে, আগামীতে নিশ্চয়ই আরও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।’
চিলড্রেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের প্রবেশ পথ। ছবি: নিউজবাংলাআলোচনা শেষে উৎসব শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন তিনি। এর পর প্রদর্শিত হয় মার্তা কারভোসকা পরিচালিত পোলিশ চলচ্চিত্র ট্রিপল ট্রাবল।
এবারের উৎসবে ঢাকার মোট তিনটি ভেন্যুতে ৩৭টি দেশের ১৭৯টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
রোববার থেকে শাহবাগের কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলচ্চিত্র দেখানো হবে। সকাল ১১টা, দুপুর ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় মোট চারটি সময়ে দেখানো হবে সিনেমা।
প্রতিটি প্রদর্শনীতে থাকবে একাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র। উৎসবের সকল প্রদর্শনী অভিভাবক, শিশুসহ সবার জন্য উন্মুক্ত। সিনেমা দেখার জন্য কোনো প্রবেশমূল্য থাকছে না।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্রধান ও বিশেষ অতিথি। ছবি: নিউজবাংলাএবারের উৎসবে অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশি শিশুদের নির্মিত চলচ্চিত্র নিয়ে প্রতিযোগিতা বিভাগ। এই বিভাগে নির্বাচিত ১৯টি চলচ্চিত্র দেখানো হবে। এর মধ্যে থেকে পুরস্কার পাবে পাঁচটি। পুরস্কারের জন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ডের সবাই শিশু-কিশোর।
মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে রয়েছে ‘মুক্তির চলচ্চিত্র’ শিরোনামে বিশেষ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বিভাগ। একই সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগ। এ বিভাগে জমা পড়ে ৮১টি দেশের এক হাজার ১১৬টি চলচ্চিত্র, যার মধ্যে উৎসব কমিটি প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচন করেছে বাংলাদেশসহ ৩৭টি দেশের মোট ১১৬টি চলচ্চিত্র।
রোববার ক্ষুদে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের স্ক্রিপ্ট রাইটিং এর উপর সকাল ১১টায় কর্মশালা করাবেন চলচ্চিত্র সমালোচক সাদিয়া খালিদ ঋতি ও সন্ধ্যা ৬টায় আরেকটি কর্মশালা করাবেন দেশের প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী নারী নিশাত মজুমদার।