মুম্বাইতে বঙ্গবন্ধু বায়োপিকের শুটিং শুরু হয়েছে ২২ জানুয়ারি। সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করছেন আরিফিন শুভ। তিনি মুম্বাই যান ১৯ জানুয়ারি। সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত যেন এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে আছেন তিনি।
শুটিং ও রিহার্সেলের মধ্যে নিউজবাংলাকে কিছুক্ষণ সময় দেন আরিফিন শুভ। জানান নিজের অনুভূতি, প্রস্তুতি ও শুটিংয়ের কিছু অভিজ্ঞতা।
একটানা সিনেমার কাজ চলছে, জানালেন শুভ। ‘ভোরে সেটে চলে যাই আর রাতে ঘরে ফিরি। কিন্তু মঙ্গলবার শুটিং হয়নি, আমরা রিহার্সেল করেছি। সময় কখন কীভাবে চলে যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না।
‘১৯ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত আমার আশেপাশে কী ঘটছে, কেন ঘটছে, আমি কোথায় আছি, এ সম্পর্কে কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আমার জগতটাই পাল্টে গেছে। শুধুমাত্র একটা মানুষকে নিয়ে ভাবা ছাড়া, আমার চরিত্রটার মধ্যে থাকা ছাড়া, আমি আর কোথাও মনোযোগ দিতে পারছি না।’ বলেন শুভ।
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে বসবাস করার জন্য নিজে নিজে কিছু প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। তার মধ্যে একটি হলো, পোশাকে পরিবর্তন।
শুভ বলেন, ‘ঢাকা থেকে আসার সময় আমি কিছু কাপড় বানিয়ে এনেছি, যেগুলো সিনেমায় আমার চরিত্রের সঙ্গে এবং সেই সময়ের সঙ্গে মিলে যায়। শুটিং ছাড়া বাকি সময়গুলোতে পাঞ্জাবি, পায়জামা ছাড়া অন্য কোনো ধরনের পোশাক আমি পরছি না।
‘ফেসবুকে যে ছবিটা দিলাম সেটাই এখন আমার নিয়মিত পোশাক। এটাকে বঙ্গবন্ধু সিনেমার লুক ভেবে ভুল করবেন না কেউ।’
এপ্রিল পর্যন্ত আরিফিন শুভ মুম্বাইতে শুটিং করবেন। প্রতিদিনের শুটিং শেষে অন্য শিল্পীদের সঙ্গে বসে সময় পার করা হয় কিনা জানতে চাইলে কিছুক্ষণ হেসে নিলেন। শুধু একটা কথাই বললেন শুভ, ‘আমরা সবাই কেয়ামতের ময়দানে আছি।’
নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে কেমন মন্তব্য পাচ্ছেন?
উত্তরে শুভ বলেন, ‘আমার কাজ বিচার করার জন্য ক্যামেরার পেছনে অনেকগুলো চোখ থাকে। তারাই ভালো বলতে পারবেন এ ব্যাপারে। আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব, আমি সেটা করে যাচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের মধ্যে আরিফিন শুভ যেন একদম মিশে আছেন। শুটিং শেষ হলে তার এই চরিত্র থেকে নিজেকে বের করে আনতে কেমন লাগবে জানতে চাইলে শুভ বলেন, ‘শুটিং শেষ হলে আমাকে ডাক্তার দেখাতে হবে। সাইকোলজিস্টের কাছে যেতে হবে, এটা আমি বুঝতে পারছি।’
বঙ্গবন্ধু সিনেমা যদি বাংলাদেশি কোনো পরিচালক বানাতেন তাহলে কেমন হতো? শুভ বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশি পরিচালক না, এটা যদি জাপানিজ বা কোরিয়ান কোনো পরিচালক বানাতেন, তাহলেও সেটা ভিন্ন হতো। কারণ এক এক জন পরিচালকের চিন্তার ধরন এক এক রকম।
‘শ্যাম বেনেগাল স্যারের কাজের ধরন অন্য পরিচালকের সঙ্গে মিলবে না। শুটিংয়ের যে পদ্ধতি বা স্ট্রাকচার সেটাতেও ভিন্নতা আছে। এক্ষেত্রে তুলনা না করাই ভালো।’
শুভ জানালেন, শুটিং সেট থেকে নতুন খবর সবাইকে জানাতে অনেক সময় লাগবে। মুম্বাইয়ের শুটিং শেষ করে বাংলাদেশে শুটিং, এরপর পোস্ট-প্রোডাকশন। তারপর ধীরে ধীরে সিনেমার বিভিন্ন খবর জানানো হবে।
শুভ আরও জানালেন, বঙ্গবন্ধু সিনেমার কাজ ছাড়াও তার প্রথম অনলাইন কনটেন্ট নিয়েও তিনি উচ্ছ্বসিত। ভারতীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভে মার্চে মুক্তি পাবে শুভ অভিনীত ছয় পর্বের সিরিজ কন্ট্রাক্ট।
শুভ বলেন, ‘এই প্রথম অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আমাকে দেখা যাবে। এর জন্যও অনেক কষ্ট করেছি। শুটিংয়ের সময়ে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছি। তারপর সুস্থ হয়ে কাজটা শেষ করেছি।’
‘কিন্তু এর মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসেই আমার কাজ দেখতে পারবে এটা অনেক আনন্দের।’