নায়করাজ রাজ্জাক নেই, কিন্তু রয়ে গেছে অসংখ্য স্মৃতি। স্মৃতিগুলো নিয়ে প্রতিবছর ফিরে আসে ২৩ জানুয়ারি; রাজ্জাকের জন্মদিন।
বেঁচে থাকলে এবারের ২৩ জানুয়ারি ৭৯তম জন্মদিন হতো রাজ্জাকের। কিন্তু কিংবদন্তি প্রয়াত এই অভিনেতার জন্মোৎসব এখন আর আগের মতো আয়োজন হয় না। পরিবার, স্বজনরা মিলে ঘরোয়াভাবে পালিত হয় নায়ক রাজের জন্মদিন।
রাজ্জাকের ছোট ছেলে অভিনেতা সম্রাট জানান, বাবা চলে যাবার পর ঘরোয়াভাবেই আয়োজিত হয় তার বাবার জন্মদিন। কেউ কেউ আসেন, এই দিনটিতে রাজ্জাকের পরিবারের মানুষদের সঙ্গে দেখা করতে।
আগে তো আর এমন হতো না। সম্রাট বলেন, ‘বাবা যখন নিয়মিত শুটিং করতেন, তখন দিনব্যাপী আয়োজন চলত। সন্ধ্যার মধ্যে বাবা বাসায় আসতেন এবং অনেক আয়োজন হতো।’
যখন রাজ্জাকের বয়স হয়ে যায় তখন জন্মদিন উদযাপনের ধরনও পাল্টে যায়।
পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে কেক কাটছেন রাজ্জাক। ছবি: সংগৃহীত
সম্রাট বলেন, ‘বাবার বয়স হয়ে গেলে নাতি-নাতনিদের নিয়ে জন্মদিন পালন করতেন। আয়োজন বেশি রাত পর্যন্ত চলত না।’
নায়ক রাজের জন্মদিনে তাকে স্মরণ করে অনেকেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
রাজ্জাকের সঙ্গে শাকিব খান। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘কর্ম, ব্যক্তিত্বে সফলভাবে একটা জীবন পার করে গেছেন। যা সবসময় আমার কাছে অনুসরণীয়। তাই চলচ্চিত্রে আমার কাছে সাফল্যের আরেক নাম নায়করাজ রাজ্জাক।
‘আমি সত্যিই ভাগ্যবান যে খুব কাছে থেকে আপনার দোয়া, স্নেহ, নির্দেশনা পেয়েছি। কোটি বাঙালি ভালোবাসায় আপনাকে রাজার আসনে বসিয়েছেন। মৃত্যুর পরেও আপনি হয়ে আছেন আমাদের হৃদয়ে চিরদিনের রাজা। ৭৯তম জন্মদিনে পরম শ্রদ্ধা হে প্রিয় নায়করাজ।’
অভিনেতা নিরব লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন নায়ক রাজ রাজ্জাক।’
বিভিন্ন চরিত্রে ও অভিনেত্রীর সঙ্গে রাজ্জাক। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের ফিল্ম অফিসার ফখরুল আলম সোহাগ বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন তার ফেসবুকে।
ছবি দেয়ার পাশাপাশি তিনি লিখেছেন, ‘নায়রাজ রাজ্জাক ৩১১টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রে রাজ্জাকের সার্বিক অবদানের জন্য ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে চলচ্চিত্রের আজীবন সম্মাননা প্রদান করে।’
আব্দুর রাজ্জাক ১৯৪২ সালে কলকাতার ৮ নম্বর নাগতলা রোডের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার পৈত্রিক বাড়ি চব্বিশ পরগনার বোরাল গ্রামে।
১৯৫৯ সালে বোম্বে ফিল্মালয় ইনস্টিটিউটে এক বছরের কোর্সে ভর্তি হন। ১৯৬২ সালের ২ মার্চ লক্ষীকে বিয়ে করেন। ১৯৬৪ সালে এক বছরের শিশু পুত্র বাপ্পাকে নিয়ে ২৬ এপ্রিল জন্মস্থান কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় আসেন।
সোহেল রানা (বাঁয়ে), উজ্জ্বল, রাজ্জাক, ফারুক ও আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
১৯৬৫ সালে তিনি ‘আখেরী স্টেশন’, ‘কার বউ’, ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’, ‘ডাকবাবু’, ‘কাগজের নৌকা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন দুই-একটি সিকোয়েন্সে।
১৯৬৬ সালে জহির রায়হানের পরিচালনায় ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হন। এরপর থেকে সৃষ্টি হতে থাকে নতুন নতুন ইতিহাস।