ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত বাংলাদেশেই ছিলেন আবরার আতাহার। শিক্ষক বলেছিলেন, আবরারকে দিয়ে কিছুই হবে না। অনেক বছর পর সেই আবরারই নিজের প্রথম শর্টফিল্ম লাইফ ইন আদার ওয়ার্ডস নিয়ে হাজির হয়েছিলেন নিউ ইয়র্ক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। মঞ্চে বলেছিলেন গল্পটি।
এমন আরও কিছু গল্প ও ভাবনার কথা সম্প্রতি তিনি শেয়ার করেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে।
গত চার বছর ধরে লিটল বিগ ফিল্মসের ব্যানারে কাজ করছেন আবরার। তার সঙ্গে পরিচালক হিসেবে আরও রয়েছেন নুহাশ হুমায়ূন ও আহমেদ হাসান সানি।
বিজ্ঞাপনের কাজেই বেশি ব্যস্ত আছেন আবরার আতাহার। কিন্তু লং লেন্থ কনটেন্ট বানানোর পর এখন সেই রকম কাজই মাথায় ঘুরতে থাকে তার।
আবরার বলেন, ‘বিজ্ঞাপনের কাজ আমি খুবই এনজয় করি। কিন্তু এখন দেখছি যে, কাজের মধ্যে কনটেন্টের গল্প মাথায় ঘুরছে।’
ঘোরারই কথা। কারণ মাইনকার চিপায় মুক্তির পর আরও কিছু কনটেন্ট নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন এই পরিচালক। পছন্দের কোনো ঘরানা নেই তার। সব ধরনের কাজই করতে চান অবরার। এবার নাকি জীবনের আরও অনেক কাছাকাছি গল্প নিয়ে কনটেন্ট নির্মাণ করবেন তিনি।
‘পরের কাজে দর্শক অন্যরকম কিছু পাবেন। আমি যেমন বা আমার ভাবনা যেমন, ঠিক সেরকম কিছু না। আমি যেমন স্ট্যানলি কুবরিক, ড্যারেন এরোনফস্কি এর কাজ পছন্দ করি। দ্য ম্যান্ডোলরিন সিরিজের প্রযুক্তি দেখে পাগল হয়ে যাই। কিন্তু এখন তো এমন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই অন্যরকম করে ভাবছি।’
নিউজবাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আবরার আতাহারআমতা আমতা করে জানালেন আসছে ঈদে নতুন কনটেন্ট পাবেন দর্শকরা। একটি মিউজিক্যাল ডকুমেন্টারিও করার কথা আছে। কিন্তু সেগুলোর কিছুই বলা যাবে না এখন। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের বারণ আছে।
কিন্তু আবরার আতাহার কি শুধু ওটিটি কনটেন্ট নিয়েই ভাবছেন?
‘একদমই না। আমি তো চাই বড় পর্দায় কাজ করতে। কিন্তু বড় পর্দার জন্য বাজেট পাচ্ছি না। সবাই ওটিটির জন্য বানাতে বলে।’ বললেন আবরার।
তার স্বপ্নের গল্প করতে গিয়ে আবরার বলেন, ‘আমি সবসময় ভেবেছি বড় স্ক্রিনে আমার সিনেমা দেখানো হচ্ছে। সিনেমা শেষে সবাই দাড়িয়ে হাত তালি দিচ্ছে।’
নিউজবাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে আবরার আতাহারকিন্তু স্বপ্নের সঙ্গে বাস্তবের মিল আপাতত ঘটছে না। মাইনকার চিপায় নির্মাণের পর অনেকেই ভালো বলেছে, অনেকে খারাপও বলেছে। কেন খারাপ কেন ভালো, সেই তর্ক-বিতর্কে নেই আবরার। তবে নিজের একটি খারাপ লাগা আছে তার।
‘যেটা বানাতে চেয়েছিলাম, সেটা বানাতে পারিনি। এটা প্রযোজকদের জন্য নয়। এটা মূলত কোভিডের কারণে।’
খারাপ লাগার বাকি কথা বলার আগেই প্রশ্ন করা হলো- ওটিটি কর্তৃপক্ষ কি গল্পে হাত দেয়? আবরার বললেন, ‘না, তারা গল্পে হাত দেয় না। তবে সবারই কিছু অবজারভেশন থাকে। কিছু মার্কেট রিসার্চ থাকে। সে অনুযায়ী ইমপ্রোভাইজেশন হয়। এমন বিষয়ে তারা অনেক প্রফেশনাল।’
আবরার আতাহার (বাঁয়ে) এবং প্রতিবেদকখারাপ লাগার বাকি অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘মোবাইল, টিভির মতো ছোট ছোট ডিভাইসে দর্শকরা আমার কনটেন্ট দেখছে, এটা ভাবতে কষ্ট হয়। কখন কে কখন কনটেন্টটা দেখছে, কখন আমাকে তার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে, ধরতেই পারছি না। ধরেন, আমি ঘুমাচ্ছি, অন্যদিকে শুভেচ্ছা, ভালো লাগা বা খারাপ লাগার কথায় আমার ইনবক্স ভরে যাচ্ছে।’
আবরার আতাহার জানালেন, ওটিটিকে বিশেষ করে দেশের ওটিটিকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চাইলে অ্যাপগুলোর ব্যবহারবিধি আরও অনেক সহজ হতে হবে। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত ওটিটিতে যে পেশাদারত্ব রয়েছে তা ভালো আগামীর ইঙ্গিত দিচ্ছে।