বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা পথের পাঁচালী ও অপরাজিত উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় নির্মাণ করেন অপু ট্রিলজি: পথের পাঁচালী (১৯৫৫), অপরাজিত (১৯৫৬) ও অপুর সংসার (১৯৫৯)।
বিভূতিভূষণের অপরাজিত উপন্যাসের শেষ কিছু অংশ চলচ্চিত্রে দেখানো বাকি রেখেছিলেন সত্যজিৎ রায়। অপু আর তার সন্তান বালক কাজলের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্রে দেখাননি।
সিনেমায় অপু ও কাজলের সেই না দেখানো গল্পটুকুই এবার পর্দায় তুলে ধরলেন পরিচালক শুভজিৎ মিত্র। অভিযাত্রিক সিনেমা দিয়ে আবারও সাদা কালোতে পর্দায় তুলে আনলেন কালজয়ী চরিত্র অপুকে।
২৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শন করা হয় সিনেমাটি। চলচ্চিত্র উৎসবের সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক এ সিনেমা নির্মাণের পেছনের ভাবনা জানিয়েছেন।
কতটুকু সাহস সঞ্চার করতে হয়েছিল তাকে, সে কথা জানিয়েছেন শুভজিৎ। বিভূতিভূষণের অপরাজিত উপন্যাসের শেষ ১০০-১৫০ পাতা নিয়ে সত্যজিৎ কেন সিনেমা বানাননি, সে চিন্তা ঘুরপাক খায় এই নির্মাতার মাথায়।
তিনি ভাবলেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বা গৌতম ঘোষের মতো পরিচালকেরাও গল্পের এই অংশটুকু নিয়ে কাজ করেননি। তাই হয়তো শুভজিৎ সাহস পেলেন সিনেমায় না দেখা অপুর গল্পের শেষটুকু দর্শকদের দেখাতে।
সিনেমায় একে একে জীবিত হয়ে ওঠে গল্পের অপু, কাজল, বিমলেন্দু, লীলা ও অপর্ণা। অপু চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্জুন চক্রবর্তী। কাজলের চরিত্রে আয়ুষ্মান মুখোপাধ্যায়।
বিমলেন্দুর চরিত্রে ছিলেন শুভ্র এস দাস, অপুর ছোটবেলার বন্ধু লীলার চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় ও অপর্ণার নির্বাক চরিত্র করেছেন দিতিপ্রিয়া রায়।
সত্যজিৎ রায়ের সিনেমায় আবহ সংগীত করেছিলেন পণ্ডিত রবিশংকর। তার সেই কাজকে সম্মান জানিয়ে, রবিশংকরের মেয়ে আনুশকা শংকর অভিযাত্রিক সিনেমার একটি অংশে সেতার বাজিয়েছেন।
সিনেমাটি গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জন্যও মনোনীত হয়েছে।