বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানির তারিখ আবারও পিছিয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের ওপর রোববার শুনানি হওয়ার কথা ছিল।
ঢাকার মুখ্যমহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম মো. বাকী বিল্লাহ রোববার এই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনটির গ্রহণযোগ্যতা শুনানির জন্য তারিখ রেখেছিলেন।
কিন্তু মামলার বাদী সালমান শাহর মা লন্ডনে থাকায় সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবী। তাই আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ ঠিক করেছে আদালত।
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ৬০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি জমা দেন পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা (পরিদর্শক) সিরাজুল ইসলাম। আগের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি আলোচিত এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে বক্তব্য দেন পিবিআই পুলিশের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
পিবিআইয়ের দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শক নন্দিত ও তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আদৌ হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি। বরং তিনি পারিবারিক কলহের জেরেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
প্রতিবেদনের বিষয়ে পিবিআই প্রধান আরও বলেন তদন্তকালে ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত এবং কথিত অনুষ্ঠানে (ডিজে পার্টি) ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৪৪ জন সাক্ষীর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ১০ জনের সাক্ষ্য ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে লিপিবদ্ধ করাসহ ঘটনার সংশ্লিষ্ট আলামত জব্দ করা হয়েছে।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান। ওই ঘটনায় তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী (প্রয়াত) অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করেন।
পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই তিনি মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন জানান। এ সময় আদালত ইউডি মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একত্রে তদন্ত করতে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেয়।
হত্যার অভিযোগের তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর সিআইডি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে সালমান শাহর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। পরে সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন।
২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। এরপর প্রায় ১৫ বছর মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।
২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের মুখ্য মহানগর হাকিম বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। এই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী তার ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে নারাজি আবেদন করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১জন তার ছেলে সালমান শাহর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।