‘আমজাদ হোসেনের ইচ্ছা ছিলো উঠোন ছবিটা বানানো। এমনকি, তিনি বলতেন- আমি যদি আরেকবার কাজ করার সুযোগ পাই তাহলে কান অথবা অস্কার পুরস্কার পাওয়ার চেষ্টা করব।’
সোমবার সকালে জামালপুর পৌর কবরস্থানে আমজাদ হোসেনের কবর জিয়ারত শেষে নিউজবাংলাকে একথা বলেন তার বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল।
তিনি আরও বলেন, ‘জামালপুর পৌর কবরস্থানের পাশে রেল লাইনে গোলাপী এখন ট্রেনে সিনেমাটির কিছু শুটিং হয়। সেই রেল লাইনের পাশেই তিনি এখন সমাহিত আছেন। এই কবরস্থানের সঙ্গে, ট্রেনের সঙ্গে, সিনেমার সঙ্গে তার জীবনের একটি কাব্য রচনা করে ফেলেছিলেন। তিনি জামালপুরকে ভালোবাসতেন বলেই বার বার জামালপুরে ছুটে এসেছেন।’
দোদুল বলেন, ‘আমজাদ হোসেনের মতো মানুষ বছরে বছরে, যুগে যুগে জন্ম নেয় না। শতাব্দীতে একবার জন্মগ্রহণ করে। এটাই সত্য যে এই শতাব্দীতে আমজাদ হোসেন একজনই ছিলেন।’
শেষে তিনি তার বাবার আত্মার শান্তির জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।
এর আগে কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার, নাট্যকার, সাহিত্যিক ও মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মরণে শোক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্র, জামালপুর। র্যালিটি শহরের বকুলতলা মোড় থেকে শুরু হয়ে জামালপুর পৌর কবরস্থানে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আমজাদ হোসেনের কবরে ফুলের শ্রদ্ধা জানান তার স্বজন, ভক্ত, অনুরাগীসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিবর্গ।
১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় আমজাদ হোসেনের প্রথম চলচ্চিত্র খেলা। এরপর তিনি নির্মাণ করেন নয়নমনি, ভাত দে, গোলাপী এখন ট্রেনে, সুন্দরী, জন্ম থেকে জ্বলছি, দুই পয়সার আলতা, কসাইসহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র। যা এখনও জায়গা নিয়ে আছে বাঙালির মনে। তার লেখা ও নির্মিত টিভি নাটকও ছিল বেশ জনপ্রিয়।
গান লেখায়, চিত্রনাট্যে ও পরিচালনায় চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান আমজাদ হোসেন। এছাড়া একুশে পদকেও ভূষিত হন গুণী এ নির্মাতা।
২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর ব্রেইন স্ট্রোক করলে প্রথমে ঢাকা এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয় আমজাদ হোসেনকে। ১৪ই ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
২৩ ডিসেম্বর জামালপুর হাইস্কুল মাঠে জানাজা শেষে পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় এই নির্মাতাকে। আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুর শহরের ইকবালপুরে জন্মগ্রহণ করেন।