মুক্তি সিনেমায় নাকি অভিনয় করবেন সাত জন নায়ক। ৪ ডিসেম্বর এমনই ঘোষণা দিয়েছেন সিনেমার পরিচালক ইফতেখার চৌধুরী। জানিয়েছেন, মহরৎ অনুষ্ঠানে সব জানানো হবে। তবে সিনেমায় সাত নায়ক থাকলেও নায়িকা কিন্তু একজনই। তিনি হলেন রাজ রিপা।
পরিচালক ইফতেখার চৌধুরীর মতে সিনেমার মূল নায়ক হলো গল্প। আর সেই গল্পকে টেনে নিয়ে যাবেন রাজ রিপা।
তাই আলাদা একটা চাপ রয়েছে রাজ রিপার ওপর। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি এটাকে চাপ মনে করছি না, এটা একটা দায়িত্ব। এটা ঠিক মতো পালন করতে আমি নিয়মিত বিভিন্ন কিছু অনুশীলন করছি, বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ নিচ্ছি।’
রাজ রিপার প্রশিক্ষণ সেশনটা বেশ কঠিন। শরীর চর্চা তো করছেনই, সঙ্গে অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। চালাতে হচ্ছে বাই সাইকেল এবং মটরসাইকেল। এসব প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে হয়েছিলেন আহত। সিনেমার খাতিরে সেরে উঠেছেন অসীম প্রাণশক্তিতে। শিগগিরই শুরু হবে সিনেমার শুটিং।
মুক্তি সিনেমার জন্য ইফতেখার চৌধুরী রাজ রিপাকে পছন্দ করার বেশ কয়েকটি ধাপ ছিল। আড্ডায় সেসব কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন রাজ রিপা।
‘আমি ইফতেখার চৌধুরীকে আগে থেকেই চিনি। পরিচালক হিসেবে তিনি আমার প্রিয় একজন। তার অগ্নি, অগ্নি টু, বিজলি সিনেমাগুলো আমার পছন্দের। এভাবে দূর থেকেই তাকে পছন্দ করে গেছি।
‘আমার অভিনীত দহন সিনেমাটি যখন মুক্তি পায়, তখন পরিচালক রায়হান রাফি আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন ইফতেখার চৌধুরীর সঙ্গে। সেই তার সঙ্গে আমার ভালোভাবে পরিচয়।
‘তার কিছুদিন পরেই ইফতেখার চৌধুরী জানালেন যে, তিনি মুক্তি নামের একটি সিনেমা করছেন, সেখানে আমি যেন অডিশন দেই।
‘অডিশনের সময়টা আমার জন্য বেশ কঠিন এবং মজারও ছিল। অডিশনে পরিচালক আমাকে একটি এক্সপ্রেশন দিতে বলেছিলেন। আমি বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে ছিলাম। আমার চুপ করে থাকা দেখে পরিচালক আমার ওপর বিরক্ত হয়েছিলেন।
‘কিন্তু আমি দমে যাইনি। আমি পরিচালককে বলেছিলাম যে, কী ধরনের এক্সপ্রেশন আপনি চাচ্ছেন? আমার আপনজন কেউ মারা গেছে, নাকি আমি পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়েছি নাকি আমি ভুত দেখেছি?
‘আমার এ কথা শুনে পরিচালক বলেছিলেন, এই প্রশ্ন আমাকে প্রথম কেউ করলো। আমার মনে হলো প্রথম পরীক্ষায় পাশ করলাম। পরিচালক আমাকে বেশ ইতিবাচকভাবে নিলেন।
‘কিন্তু আমাকে তখনও চূড়ান্ত করেননি পরিচালক। আমার আরও কিছু পরীক্ষা বাকি। এর মধ্যে আমি আমার সাইকেল ও বাইক চালানোর ভিডিও দেখালাম পরিচালককে। তিনি বেশ খুশি হলেন।
‘পরিচালক একদিন জানতে চাইলেন যে, আমি নোয়াখালীর ভাষায় কথা বলতে পারি কি না। সবার জন্য বলে রাখি আমার দাদু বাড়ি ও নানু বাড়ি নোয়াখালিতে। তাই পরিচালককে বললাম যে, নোয়াখালীর ভাষা শিখতে বা বলতে অসুবিধা হবে না।
‘এমন আরও অনেক পরীক্ষা এবং পদক্ষেপের মাধ্যমে আমি সিলেক্ট হয়েছি মুক্তি সিনেমায়।’
করোনার কারণে সিনেমার শুটিং করা যায়নি সময় মতো। এরমধ্যে অনেক ধরনের প্রশ্ন জমেছে দর্শকদের মধ্যে । এই যেমন সিনেমার যে পোস্টারটি প্রকাশ পেয়েছে, সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে, রাজ রিপা তীর ধনুক হাতে দাঁড়িয়ে আছেন অ্যাকশন মুডে।
কিন্তু ২০২০ সালে তীর ধনুকের ব্যবহার কেন প্রয়োজন হলো? রাজ রীপা জানান, ‘এমন অনেক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় যে, হাতের কাছে যা থাকে তাই নিয়েই যুদ্ধ করতে হয়। পোস্টারে তীর ধনুক সেই কারণে।’
সিনেমার জন্য অনেক কষ্ট করছেন রাজ রিপা। তাই সিনেমাটি নিয়ে তার আবেগটাও বেশি। জানিয়েছেন, সিনেমার একটা বড় দায়িত্ব তার ওপর। যে কোনো মূল্যে দায়িত্বটা ঠিক মতো পালন করতে চান তিনি।
রাজ রিপা সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য দিয়ে রাখা ভালো। ছোট বেলায় ন্যাশনাল পর্যায়ে ব্যাটমিন্টন খেলেছেন রিপা, করেছেন স্কাউটিং।
রাজ রিপা ও আনিসুর রহমান মিলন
আবার প্রথম কথায় ফেরা যাক। রিপার বিপরীতে সাত নায়ক থাকার যে ঘোষণা দিয়েছেন পরিচালক, তার মধ্যে থেকে তিনজনের নাম এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। তারা হলেন আনিসুর রহমান মিলন, আমান খান এবং কায়েস আরজু।