ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো এখন সিনেমা হলের বিকল্প। করোনা মহামারির কারণে এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে দেশ-বিদেশের নির্মাতা ও প্রযোজকরা সিনেমা মুক্তি দিচ্ছেন নিয়মিতই।
ওটিটি বক্স অফিস সংস্কৃতি এখনও তৈরি না হওয়ায় সিনেমাগুলো ব্যবসায়িকভাবে সফল না বিফল, তা বিচার করার মাপকাঠি নেই।
সম্প্রতি ওটিটিতে মুক্তি পাওয়া কিছু বলি সিনেমার ব্যবসা নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে বিনোদন ওয়েবসাইট বলিউড হাঙ্গামা। ওটিটিতে মুক্তি না পেলে সিনেমাগুলোর ব্যবসা কেমন হতো, সেটাই দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
এর মধ্যে রয়েছে সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষ সিনেমা দিল বেচারা । সুশান্তের মৃত্যুর পর ২৮ জুলাই ডিজনি প্লাস হটস্টারে মুক্তি দেয়া হয় সিনেমাটি। বিশ্লেষণ বলছে যদি সুশান্তের মৃত্যুর আগে সিনেমাটি মুক্তি দেয়া হতো তাহলে সিনেমাটি ব্যবসায়িকভাবে বিফল হতো।
ভারতের বক্স অফিসের তথ্য অনুযায়ী ৩০ কোটির এই সিনেমা আয় করত ১৫ কোটি ভারতীয় রুপি।
ডিজনি প্লাস হটস্টারে মুক্তি পাওয়ার পর আইএমডিবি তে এর রেটিং হয় ৭.৯ ও রটেন টমাটোতে রেটিং হয় ৮৭ শতাংশ। টাইমস অব ইন্ডিয়ার রিভিউতে সুশান্তের অভিনয়কে ‘ব্রিলিয়ান্ট’ বলা হয়েছে।
কুনাল খেমু, রাসিকা দুগাল, রণবীর শোরে ও বিজয় রাজ অভিনীত সিনেমা লুটকেস। কমেডি সিনেমা হলেও কুনাল খেমু অভিনীত এই সিনেমা ব্যবসায়িক সাফল্য পেত না বলে মন্তব্য করেছে ভারতের বক্স অফিস। ডিজনি প্লাস হটস্টারে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি আয় করত মাত্র ৬ কোটি।
এনডিটিভি তাদের রিভিউতে বলে, এ সিনেমাটি সাদামাটা, তবে বিজয় রাজ ও গজরাজ রাও এর অভিনয়ের জন্য তারা একে আরও এক নম্বর বেশি দিয়েছে।
গুলাবো সিতাবো অমিতাভ বচ্চন ও আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত প্রথম সিনেমা। পরিচালক সুজিত সরকার এর আগে অমিতাভ কে নিয়ে হিট সিনেমা পিকু ও আয়ুষ্মানের জনপ্রিয় সিনেমা ভিকি ডোনার উপহার দিয়েছে।
গুলাবো সিতাবো সফল হতো না বলে ধারণা করেছে ভারতের বক্স অফিস। বড় বাজেটে তৈরি সিনেমাটি আয় করত ২৫ থেকে ৩০ কোটি ভারতীয় রুপি।
তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস এ সিনেমার রিভিউতে বলেছে, সিনেমাটি বলিউডের মান বজায় রাখেনি। কারণ এতে নাচ-গান, মেলোড্রামা নেই। যার কারণে তারা একে নিউ ওয়েভ সিনেমার তালিকায় ফেলেছে। একই সঙ্গে গল্পটিতে ভারতীয় আধুনিকরণের ছোঁয়া আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যা বালানের শকুন্তলা দেবী মুক্তি দেয়ার কথা ছিল মা দিবসকে কেন্দ্র করে। কারণ সিনেমার গল্প মা-মেয়ে কেন্দ্রিক, যা পরিবারের সঙ্গে বসে উপভোগ করার জন্য উপযুক্ত। কিন্তু তারপরেও বক্স অফিসের ধারনা, সিনেমাটি লাভ করতে পারত না। ২৫ থেকে ৩০ কোটি রুপির সিনেমাটি আয় করত এর বাজেটের সমান।
অন্যদিকে রটেন টমাটো এই সিনেমাকে ৮৮ শতাংশ রেটিং দেয়। নিউজ ১৮ তাদের রিভিউতে বলে, বিদ্যা বালান এই চরিত্রকে আরও উজ্জ্বল করেছেন।
ভারতীয় বক্স অফিসের ধারণা অনুযায়ী জাহ্নবী কাপুর অভিনীত বায়োপিক গুঞ্জন সাক্সেনা হতো একমাত্র ব্যবসায়িকভাবে সফল সিনেমা। ৩০ কোটি রুপির এই সিনেমা আয় করত ৫৫ কোটি রুপি।
রটেন টমাটো ১০০ শতাংশ রেটিং দিলেও আইএমডিবিতে দেখা যায় এই সিনেমার রেটিং ৫.৩। এনডিটিভি রিভিউতে বলেছে, পঙ্কজ ত্রিপাঠির কারণে সিনেমায় ড্রামা এসেছে। ভারতীয় পাইলট গুঞ্জন সাক্সেনার আত্মজীবনীতে শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবী কাপুরের অভিনয় নিয়ে নাখোশ অনেক ভক্ত। অনেকে মন্তব্য করেছেন, স্বজনপ্রীতির কথা বাদ দিলে এটা একটা ভালো সিনেমা।
অ্যাকশনধর্মী সিনেমা খোদা হাফিজও পড়ত ফ্লপের তালিকায়। বিদ্যুৎ জামওয়াল অভিনীত সিনেমাটি আয় করত ২৫-৩০ কোটি ভারতীয় রুপি যেখানে সিনেমাটির বাজেট ছিল ১৫-২০ কোটি রুপি।
এ সিনেমার আইএমডিবির রেটিং ৭.২। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলেছে, খোদা হাফিজের স্ক্রিপ্ট ভালো নয়। নিউজ ১৮ বলেছে, বিদ্যুৎ জামওয়াল সিনেমাকে বাঁচিয়েছে।