বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অস্কারে সিনেমা পাঠায় কে?

  •    
  • ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ০৮:৩৭

প্রতি বছর ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবিই কেন মনোনীত হয়, এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে চলচ্চিত্র অঙ্গনের একটি অংশ। তারা প্রশ্ন তুলছে, চলচ্চিত্র বাছাইয়ের পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ে। 

৯৩তম অস্কার আসরে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ থেকে নির্বাচিত হয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত চলচ্চিত্র ইতি তোমারই ঢাকা। অস্কার কমিটি বাংলাদেশ নামে একটি কমিটি এটি বাছাই করেছে। এ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ।  

চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা প্রতি বছর দেশের চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে একটিকে মনোনয়ন দেয় অস্কারে বিদেশি ভাষার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য।

তবে বাংলাদেশে চলচ্চিত্র অঙ্গনের সব মহল অস্কারের জন্য চলচ্চিত্র বাছাইয়ে এই প্রক্রিয়া সমর্থন করে না। ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ অফ বাংলাদেশ নামে ভিন্ন আরেকটি প্ল্যাটফর্ম বরাবর আপত্তি তুলে থাকে এ প্রক্রিয়া নিয়ে। তাদের দাবি, দেশের চলচ্চিত্র সমিতিগুলোর কেন্দ্রীয় সংগঠন হিসেবে কারও এই প্রক্রিয়া চালানোর এখতিয়ার থাকে, তবে সেটি তাদের। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর সিনে সোসাইটি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, মুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির মতো বেশ কিছু সংগঠনের জোট হিসেবে কাজ করে ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটি অফ বাংলাদেশ।

উল্টোদিকে বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ, যারা মনোনয়ন প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করে, তাদের দাবি দেশের চলচ্চিত্রের মূল সাতটি সংগঠন সম্পৃক্ত তাদের ফেডারশনের সঙ্গে। যার মধ্যে রয়েছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ব্যবস্থাপক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির মতো সংগঠন।

অস্কার কমিটি বাংলাদেশের মিডিয়া কো- অরডিনেটর রবিন শামস নিউজবাংলাকে জানান, ‘আকাডেমি মোশন পিকচার’-এর কাছ থেকে স্বীকৃতি নিয়েই প্রতিবছর মনোনয়নের কাজ করে যাচ্ছে অস্কার কমিটি বাংলাদেশ ।’

অস্কার কমিটির নিয়ম অনুযায়ী শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক কাহিনীচিত্র বিভাগে প্রতিযোগিতা করার জন্য যে চলচ্চিত্রটি জমা পড়বে, সেটি নিজ দেশের মূল ফেডারেশনের মাধ্যমে মনোনীত হয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে এই মূল ফেডারেশনের ভূমিকাটি পালন করে থাকে বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ।

২০০২ সালে মাটির ময়না অস্কারে যাওয়ার পরের বছর থেকে এই সোসাইটি প্রতিবছর সিনেমা নির্বাচন করে আসছে। সাধারণত নয় সদস্যের একটি কমিটি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজটি করে থাকে। এ বছরেও হাবিবুর রহমান খানকে চেয়ারম্যান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

২০০৩ সাল থেকে ২০২০ পর্যন্ত বাংলাদেশের যে ১৫টি সিনেমা অস্কারের বিদেশি ভাষার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে, তার মধ্যে ১৩টি সিনেমাই প্রযোজনা সংস্থা ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত। এবারও ইমপ্রেসের ছবিই জায়গা পেয়েছে।  

ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজকদের মধ্যে আবু সাহেদ ইমন নিউজবাংলাকে জানান, ‘ইমপ্রেস তো প্রতিবছরই অনেক সিনেমা প্রযোজনা করে। যার মধ্যে অনেক চলচ্চিত্র জাতীয় পুরস্কারও পাচ্ছে প্রতিবছর। ফলে আমাদের ছবি যাওয়াটা অস্বাভাবিক কোনো কিছু না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সাথে বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। তারা একটি স্বতন্ত্র বডি। ফলে শুধু তাদের সিদ্ধান্তেই মনোনীত হয় কোন ছবিটি যাবে।’

যে প্ল্যাটফর্ম এ প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলছে, সেই ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ অফ বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বহুবছর ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত। আমরা দেশের চলচ্চিত্র সংসদ ও সংগঠনগুলোর সাথে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে থাকি। কিন্তু বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটিজ নামে একটি সংগঠন কিছু স্বার্থান্বেষী চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজকদের সাথে নিয়ে কাজ করছে ২০০৫ সাল থেকে। তারাই নির্ধারণ করে কোন চলচ্চিত্র অস্কারে শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক কাহিনীচিত্র বিভাগে প্রতিযোগিতা করবে। দেখা গেছে প্রতিবছরই একটি নির্দিষ্ট প্রযোজনা সংস্থা ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সিনেমাই তারা মনোনয়ন দেন। ফলে এই প্রক্রিয়াটি ত্রুটিপূর্ণ বলে আমাদের মনে হয়।’

বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটির তত্ত্বাবধানে অস্কার কমিটি বাংলাদেশ কাজ করে থাকে। অস্কার কমিটির রবিন শামস নিউজবাংলাকে জানান, ‘আমাদের সাথে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা স্বতন্ত্র ফেডারেশন হিসাবে কাজ করি।’

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন পরিচালক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিবছর বাংলাদেশ অস্কার কমিটি সিনেমা জমা নেয়া বাবদ ২৫ হাজার টাকা দাবি করে। এ টাকা নেওয়ার সঠিক কোনো কারণ নেই এবং এটি অনৈতিক। পৃথিবীর আর কোনো দেশের অস্কার মনোনয়ন কমিটির কাছে সিনেমা জমা দেয়ার জন্য টাকা দিতে হয় না।’

এই বিষয়ে রবিন শামস বলেন, ‘আমরা যে টাকা নেই, সেটি খুবই সামান্য। যে চলচ্চিত্রটি মনোনয়ন পায়, সেটিকে অস্কার মোশন পিকচারে পাঠানোর খরচ হিসেবে এ টাকা নেয়া হয়। এমনকি আমাদের কমিটিতে যে নয় জন সম্মানিত বিচারক থাকেন, তাদের জন্য সম্মানীর টাকাও আসে এই ২৫ হাজার টাকা থেকে।’

এ বিভাগের আরো খবর