বলিউডের সঙ্কট যেন কাটছেই না। গত কয়েক মাস ধরেই একটার পর একটা ঝড় বয়ে চলেছে। কখনো মি টু, কখনো নেপোটিজম (স্বজনপ্রীতি), কখনো অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে আবার কখনো মাদক নিয়ে।
এবার বলিউডের পাশে এসে দাঁড়ালেন বেশ কিছু নামি সংস্থা এবং জনপ্রিয় তারকারা। তাদের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে বলিউডসহ হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে যেভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে, তাতে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
এ অভিযোগ নিয়ে সোমবার দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলা করল বলিউডের ৩৮টি নামি প্রযোজনা সংস্থা ও তারকারা।
বলিউডের যে প্রযোজনা সংস্থাগুলো আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে, তারা হলো, দ্য ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডিউসার্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়া, সিনে অ্যান্ড টিভি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টিভি প্রোডিউসার্স কাউন্সিল, স্ক্রিনরাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন, আমির খান প্রোডাকশনস, অজয় দেবগন ফিল্মস, অনিল কাপুর ফিল্মস অ্যান্ড কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক, আরবাজ খান প্রোডাকশনস, ধর্মা প্রোডাকশনস, নাদিয়াদওয়ালা গ্র্যান্ডসন এন্টারটেইনমেন্ট, রমেশ সিপ্পি এন্টারটেইনমেন্ট, রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা পিকচার্স, রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্ট, রিল লাইফ প্রোডাকশনস, রিলায়েন্স বিগ এন্টারটেইনমেন্ট, রয় কাপুর ফিল্মস, সালমান খান ফিল্মস, বিনোদ চোপড়া ফিল্মস, বিশাল ভরদ্বাজ পিকচার্স, যশরাজ ফিল্মস প্রভৃতি।
এ আইনি ব্যবস্থার নেপথ্যে অন্য এক কারণও রয়েছে। অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বি টাউন সম্পর্কে 'নোংরা এবং কুৎসিত' শব্দ ব্যবহার করছে। বলিউডের প্রায় প্রত্যেকেই মাদক চোরাচালান এবং মাদকে আসক্ত বলে দাবি করা হচ্ছে। আর তাতেই ইন্ডাস্ট্রির ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ মামলাকারীদের।
তাদের দাবি, চ্যানেলগুলো নিজেদের টিআরপি বাড়াতেই এ নোংরা ও জঘন্য পথ বেছে নিয়েছে। অভিযোগকারীদের তির রিপাবলিক টিভি, টাইমস নাও এবং অন্য দুটি দক্ষিণ ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের দিকে।
এ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ‘রিপাবলিক টিভি’র এডিটর-ইন-চিফ অর্ণব গোস্বামী এবং টাইমস নাও–এর সঞ্চালক নবিকা কুমারসহ চার সাংবাদিকের নাম। তালিকায় রয়েছেন রিপাবলিক টিভির সাংবাদিক প্রদীপ ভান্ডারি, টাইমস নাও–এর এডিটর–ইন–চিফ রাহুল শিবশঙ্কর।
‘অবমাননাকর, অসম্মানসূচক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন খবর পরিবেশন এবং মন্তব্য’–এর অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আইনি পরামর্শদাতা সংস্থা ডিএসকে লিগ্যালের পক্ষে করা এই মামলায় বলা হয়েছে, ‘বলিউডের বিরুদ্ধে যেভাবে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তাতে ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে সিনেমা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলেই। মহামারির কারণে এমনিতেই উপার্জনে সঙ্কট। তার ওপর এই অসম্মান আরও ক্ষতি করেছে।’
এই সংগঠনের শামিল হওয়ার অর্থ প্রায় পুরো বলিউডই মামলাকারীদের সঙ্গে। সংগঠনের ১৩০ সদস্যের মধ্যে শুধু পরিচালক বা প্রযোজকই নয়, রয়েছেন বলিউডের প্রায় সব বড় স্টুডিও কর্তৃপক্ষ এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোও।