ঘরে আবদ্ধ থাকার বিধি শিথিলের প্রথম দিনই কলকাতার সল্টলেক ঐক্যতানে বসল অন্যরকম নাটকের আসর। মাস্কে মুখ ঢেকে, স্যানিটাইজারে স্নান সেরে, সামাজিক দূরত্ব মেনে হলে ঢুকলেন দর্শক।
তবে চমক অন্য জায়গায়। নাটকের কুশিলবরাও মানলেন একই নিয়ম। তাঁরাও মঞ্চে এলেন সামাজিক দূরত্ব মেনে, মুখোশে মুখ ঢেকে।
নাট্যদল পূর্বপশ্চিম প্রযোজিত ‘জ্বরাসুর বধ পালা’। মঙ্গলকাব্য থেকে তুলে আনা শীতলামঙ্গলের লৌকিকতার আড়ালে আসলে কোভিডের সঙ্গেই টক্কর নেওয়ার ভাবনা। মহামারির শক্তি নিয়ে মর্ত্যে আসা জ্বরাসুর আর দেবী কাত্যায়ণী বা লোকজ শীতলার উপাখ্যানে সাম্প্রতিক রোগগ্রস্ত বিশ্বকেই ধরতে চেয়েছেন নাট্যকার উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়।
এ নাটকে অপেরার আঙ্গিকে উঠে এসেছে করোনাকাল আর তার অভিঘাতে বদলে যাওয়া জীবনের উপাখ্যান। অপেরার দাবি মেনেই নাচে–গানে ভরে গেছে ‘পালা’। প্রাচীন শীতলা পালাগান এ নাটকে নতুন আঙ্গিক নিয়ে ধরা দিয়েছে দর্শকের কাছে। উপসংহারে ছিল মানুষের মন থেকে ব্যধি–ভয় দূর করে আবার এক নতুন রোগমুক্ত বিশ্বের স্বপ্ন দেখানোর প্রয়াস। নির্দেশক সৌমিত্র মিত্রের এই কাজ কোভিড পরিস্থিতিতে ইতিহাস লিখল বাংলা নাটকের দুনিয়ায়। যে ইতিহাসে হাতধরাধরি করে চলেছে বন্ধন আর মুক্তি।