ভারতের এবারের গ্রীষ্মটা একটু ভিন্ন। প্রতি বছর এ সময়ে হলগুলাে দর্শকে ঠাসা থাকলেও এবার ঘরেই থাকতে হচ্ছে সিনেমাপ্রেমীদের।
করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছরের মার্চ থেকেই বন্ধ সব সিনেমা হল। তবে বলিউড সিনেমাপ্রেমীদের জন্য সুখবরও আছে। হল বন্ধের শূন্যতা পূরণ করছে অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাজনিত ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বেশ কিছু চলচ্চিত্রের হলে মুক্তির বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে ছবিগুলো মুক্তি দেওয়া হচ্ছে নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও ও ডিজনি+হটস্টারের মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে।
ভারতে করোনা মহামারী হল মালিকদের মাথাব্যথার কারণ হলেও এটি বিকল্প পথও তৈরি করেছে। এটি দেশটিতে বড় পর্দা ও ছোট পর্দার মধ্যে দূরত্ব কমতে থাকার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে।
বলিউডের এ পরিবর্তন নিয়ে চলচ্চিত্র সাংবাদিক অসীম ছাবরা বিবিসি নিউজকে বলেন, বলিউডকে তড়িঘড়ি করার পাশাপাশি পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ও দিতে হয়েছে।
ভারতে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। দেশটিতে এখনো প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। খুব দ্রুতই দেশজুড়ে জনসমাগমস্থল খুলে দেওয়ার অবস্থা নেই।
এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের জুন থেকেই বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বড় বাজেটের সিনেমাগুলো মুক্তি পেতে থাকে। এর মধ্যে প্রথম সিনেমাটি হলো আমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘গুলাবো সিতাবো’। এরপর আসে ‘শকুন্তলা দেবী’, ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’র মতো কিছু ছবি।
নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার কনটেন্ট অংশের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিকা শেরগিল বিবিসিকে বলেন, ‘অনেকেই বুঝতে পেরেছে যে, স্ট্রিমিং শুধু ভবিষ্যৎই নয়, এটি একই সঙ্গে বর্তমানও।’
ভারতে নেটফ্লিক্স ও অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর সবচেয়ে বড় মার্কেট শেয়ার রয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ১৮টি নতুন সিনেমা। অন্যদিকে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও জানিয়েছে, তারা ২০২০ সালের ১৪টি সিনেমা মুক্তি দেবে। ডিজনি + হটস্টার এ বছর সাতটি সিনেমার প্রিমিয়ার করবে।
বলিউডের বড় তারকারা ছোট পর্দায় খুব কমই কাজ করেন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বলিউডের সঙ্গে ছোট পর্দার দূরত্ব কমবে বলে মনে করছেন সাংবাদিক অসীম ছাবরা।
এ বিষয়ে বলিউড অভিনেতা অভিষেক বচ্চন বিবিসিকে বলেন, ‘দিনশেষে একজন অভিনেতার কাজটি হলো পরবর্তী কোন একটি গল্প নিয়ে কাজ করা, যেটি মানুষের কাছে বলতে হবে।’
অনিল কাপুর, নাসিরুদ্দিন শাহ্, শাবানা আজমি ছাড়াও ৯০ দশকের অভিনেত্রী কাজল, কারিশমা কাপুরসহ আরও অনেক শিল্পী অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য কাজ করছেন। আগামীতে অনেকেই হয়তো কাজ করবেন এসব প্ল্যাটফর্মে।
চলচ্চিত্র সমালোচক শৈবাল চট্টোপাধ্যায় বিবিসিকে বলেন, বলিউড নতুন রূপে ফিরে আসবে। সিনেমার বাজেট কমানো হচ্ছে; নতুন ধরনের স্ক্রিপ্ট নিয়ে কাজ হচ্ছে। বিদেশি লোকেশনে শুটিং বাদ দেয়া হচ্ছে। এমনকি বড় শিল্পীদের পারিশ্রমিকও কম দেয়া হবে।