চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সদস্য দোস্ত মোহাম্মদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতাকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে চবিসাস।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বহিষ্কৃত দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন- চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ এবং উপদপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘তদন্ত কমিটির রিপোর্টের আলোকে আমরা ওই দু’জনকে শাস্তির আওতায় এনেছি। অভিযুক্ত খালেদ মাসুদ ও আরাফাত রায়হানকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা যদি এরপরও ঔদ্ধাত্যপূর্ণ আচরণ করে, তাহলে তাদের শাস্তির পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।’
তবে এ সিদ্ধান্তকে ‘লোক দেখানো’ বলে উল্লেখ করেছে চবিসাস।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, ‘বিচারের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রহসন করছে৷ আমরা এরকম বিচার চাইনি। এটা শুধু লোকমাত্র দেখানোর জন্য৷
‘মনে হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদের কাছে জিম্মি। অপরাধীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চেয়ে ক্ষমতাশালী, তা-ই প্রমাণ করলো তদন্ত কমিটি৷’
এ রায়ে কোনোভাবেই সন্তুষ্ট নন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবো৷’
চবিসাস সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘৬ মাসের বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত আমাদেরকে বেশ আশাহত করেছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এমন বিচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভুক্তভোগী সাংবাদিক এখনও হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। শাস্তির নামে মূলত অপরাধীদেরকে সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। আমরা আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাব।’
১৯ জুন রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে চায়ের দোকানে চেয়ারে বসা নিয়ে দোস্ত মোহাম্মদকে মারধর করেন চবি শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ, উপদপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে দলবেঁধে উপর্যুপরি তার পেটে লাথি মারতে থাকেন ঘটনাস্থলে থাকা তাদের ১০-১২ জন সহযোগী।
ভুক্তভোগী দোস্ত মোহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকাস্টেটের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
মারধরের পর তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।