বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

  •    
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৬:৫০

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যা বেশি। খাদ্য নিরাপদ করতে হলে কৃষিজমি রক্ষা করতে হবে। এ জন্য ১০০ শিল্প অঞ্চল করছি। কৃষিজমিতে শিল্প করা যাবে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা এগুলো চিন্তা না করায় অনেক ভালো মানের জমি আমরা হারিয়েছি। আমরা আর জমি হারাতে চাই না।’

দেশেই ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সোমবার তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘চাহিদার ৯৮ ভাগ ভোজ্যতেলই আমাদেরকে বাইরে থেকে আনতে হয়। এটা আমরা কেন করব? সরিষার তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটাকে আরও হালকা করা যায়। চালের কুড়া থেকেও এখন তেল হচ্ছে। এ নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া দরকার।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যা বেশি। খাদ্য নিরাপদ করতে হলে কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে। এজন্য একশ’ শিল্প অঞ্চল করছি। শিল্প করলে এখানেই করতে হবে। কৃষি জমিতে শিল্প করা যাবে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা এগুলো চিন্তা না করায় অনেক ভালো মানের জমি আমরা হারিয়েছি। আমরা আর জমি হারাতে চাই না।

‘কোনো ধরনের কৃষি জমি বিশেষ করে আমাদের তিন ফসলি জমি কেউ নষ্ট করতে পারবে না। কিছু করলে তারা কোনো সুবিধাই পাবে না।’

উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধান, মাছ ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি। গবেষণা করেই কিন্তু আমরা এটা করতে পেরেছি। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি বলেই আমাদের খাদ্য ঘাটতি কখনও হয়নি। এখানে অনেক বাধাও এসেছে বিভিন্ন সময়। অনেকে প্রশ্নও তোলার চেষ্টা করেছেন।

‘তবে সাফল্য দেখাতে পেরেছি বলেই খাদ্যের ঘাটতি আমাদের কখনও হয়নি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো আমাদের লেগেই থাকে, এটা লেগে থাকবে। তবে এটাকে মোকাবেলা করেই ফসল উৎপাদনে বহুমুখীকরণ আমরা কাজে লাগাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলে প্রচুর কচুরিপানা হয়। এটিকে ভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। এর উপরেই কিন্তু প্রচুর সবজি হয়। এটাকে আমরা সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছি। জমির স্বল্পতা থাকায় আমরা এটা করছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘কেবল কৃষি উৎপাদন করলেই হবে না, প্রক্রিয়াজাতকরণও করতে হবে। কাঁচামাল যেটা আমাদের প্রয়োজন, আমরা যেন বেশি ফলন করে বিদেশেও রপ্তানি করতে পারি সেদিকে নজর দিতে হবে। আমরা এদিকে লক্ষ্য রেখে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেই হবে না, পুষ্টিও নিশ্চিত করতে হবে। সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি।’

‘গবেষণার জন্য আমরা প্রথম থেকেই লবণাক্ত সহিষ্ণু, খরা সহিষ্ণু ও জলমগ্ন ধানের জাত উদ্ভাবনে গবেষণা করছি। লবণাক্ত সহিষ্ণুতায় আমরা সফল করেছি। পাটের ওপরও আমরা গবেষণা করছি। জন্ম রহস্য উদঘাটনের ফলে পাটের উৎপাদন বাড়ছে। এটি হতে পারে রপ্তানিমুখী পণ্য।’

পোষা প্রাণির যত্নে কর্মসংস্থানের সুযোগ

পোষা প্রাণির যত্নে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভ্যাটেরিনারিতে যারা শিক্ষা গ্রহণ করেন তারা সবাই যে শিক্ষক হবেন বা চাকরি পাবেন তা নয়। তারা নিজেদের বিভিন্ন ব্যবসায় নিয়োগ করতে পারেন।’

‘আবার অনেকেই গৃহপালিত পশু-পাখি পালন করেন। কোথাও যদি যেতে হয় তাদের রেখে যাওয়ার জায়গা থাকে না। ভ্যাটেরিনারিতে যারা শিক্ষা নিচ্ছেন তাদের বলব, এটা আপনাদের জন্য ভালো একটি ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে। এতে অনেকেরই কর্মসংস্থানও হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার পর বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। তার ওপর ইউক্রেন যুদ্ধ ও স্যাংশন। খাদ্যপণ্যের দাম এতো বেশি বেড়ে গেছে যে তা সবার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।

‘এ অবস্থায় আমাদের দেশ যাতে করে কোনো বিপদে না পড়ে সেজন্য উৎপাদন বাড়ানো ও সংরক্ষণে জোর দিতে হবে। একশ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমরা কিন্তু কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে জোর দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘কৃষি এক সময় ছিল খেয়ে-পরে বাঁচা। এখন শুধু খেয়ে-পরে বাঁচা নয়, এটি হতে পারে অর্থকরী ফসল; যার মাধ্যমে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। আমাদের রপ্তানির বাস্কেট আরও বাড়াতে পারি।

‘কৃষি উৎপাদনের বাণিজ্যিক ব্যবহার যাতে আরও বাড়ানো যায় সেদিকেও আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’

বারো মাসি কাঁঠালে সম্ভাবনা

মাংসের বিকল্প হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠাল উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। কৃষি গবেষকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চলে প্রচুর কাঁঠাল হয়। ইতোমধ্যে আপনারা গবেষণা করে বারোমাসি কাঁঠালের জিনোম সিকোয়েন্স করেছেন। এজন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

‘উন্নত অনেক দেশে অনেকেই মাংস খেতে চায় না। মাংসের পরিবর্তে কাঁঠাল। কাঁচা কাঁঠালের কাবার হয়, বার্গার হয়। বিদেশে এগুলো অনেক বেশি দামে বিক্রি হয়। এটার ব্যাপক চাহিদা। আমরা যদি বারো মাসি কাঁঠাল উৎপাদন করতে পারি আর কাঁঠালের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরি করতে পারি তাহলে তা মাংসের ভালো বিকল্প হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজও এখন আমরা বছরে দুবার উৎপাদন করতে পারি। এখন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পেঁয়াজ, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফল শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। আমাদের দেশের মাটি উর্বর। আমরা যদি একটু নজর দেই তাহলে এগুলো করে আমরা বিদেশে রপ্তানি করতে পারি।’

এ বিভাগের আরো খবর