শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পাশে থেকে চাকরি হারানো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষককে পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। তাদেরকে চাকরিচ্যুত করতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা হয়েছে।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
তিন শিক্ষক হলেন- বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী শিক্ষক আবুল ফজল, ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী ও বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম।
শিক্ষকদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
তিনি জানান, ২০২০ সালের ১ ও ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানানোর কারণে তিন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
বেতন-ফি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দাবিতে ২০২০ সালের শুরুতে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা প্রশাসনিক ভবনের সব ফটকগুলোতে তালা লাগিয়ে দেন এবং প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।
সেই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছিলেন এই তিন শিক্ষক। এতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রোষানলে পড়েন। ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় তাদেরকে বরখাস্ত ও অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়। পরে ২৮ জানুয়ারি এ বিষয়ে চিঠি ইস্যু করেন রেজিস্ট্রার।
এই সিদ্ধান্ত সে সময় শিক্ষার্থীদের আরও ক্ষুব্ধ করে। তিন শিক্ষককে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে অংশ নেন শিক্ষকরাও।
চাকরিচ্যুতের চিঠি প্রত্যাহার চেয়ে ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষকদের পক্ষে নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশের জবাব না পেয়ে তারা উচ্চ আদালতে রিট করেন।
সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে। এরপর রুলের উপর চুড়ান্ত শুনানি শেষে শিক্ষকদের চাকরি থেকে বরখাস্ত ও অপসারণের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
উচ্চ আদালতের ব্যাপারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, তবে আদালতের আদেশের কপি এখনও হাতে পাইনি। পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’